‘বিতর্কিত’ বিচারপতিদের বাদ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট খুলে দেওয়ার দাবি মাহবুব উদ্দিন খোকনের

এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনফাইল ছবি

‘বিতর্কিত’ বিচারপতিদের বাদ দিয়ে রোববার থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি বিচার বিভাগ ঢেলে সাজানোরও দাবি জানান।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভবনে সভাপতির কক্ষে এক ব্রিফিংয়ে এ দাবি জানান মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) নোটিশ দেওয়া হলো আজকে (বৃহস্পতিবার) আদালত খোলা থাকবে। আবার রাতে (বুধবার রাতে) বলল অনির্দিষ্টকালের জন্য আদালত বন্ধ থাকবে। কী কারণে বন্ধ, কী কারণে খোলার নোটিশ দেওয়া হলো—আমরা জানি না, দেশবাসীও জানে না। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দাবি, সারা বাংলাদেশের সব অফিস চলছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ সুপ্রিম কোর্ট বন্ধ থাকবে কেন? বিচারকার্য বন্ধ থাকবে কেন? এ জন্য আমরা অনতিবিলম্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচার কার্যক্রম চালুর রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’

সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচার কার্যক্রম রোববার থেকেই চালু করার আহ্বান জানিয়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘তবে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিতর্কিত, অতিরিক্ত আওয়ামী লীগ, রাজনৈতিকভাবে বিচার করা বিচারপতিদের বাদ দিয়ে আগামী রোববার যেন সুপ্রিম কোর্ট চালু হয়—আমাদের দাবি। ছাত্ররা দাবি করছে, অনেকের নাম বলেছে, নামগুলো বললাম না। তবে ছাত্রদের দাবির সঙ্গে একমত। বিচার বিভাগ ঢেলে সাজাতে হবে।’

বিচার বিভাগকে আওয়ামী লীগ সরকার পচিয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে অসুস্থ বানিয়ে যাঁরা বিদেশে রেখে পদত্যাগ ও দেশত্যাগে বাধ্য করেছেন, তাঁদের বিচার করতে হবে।

এ সময় সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ফাতেমা আক্তার ও শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

৫৭ বিচারপতির পদত্যাগ দাবি

প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সব বিচারপতি ও হাইকোর্ট বিভাগের ৫০ বিচারপতির পদত্যাগের দাবি জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে সাধারণ আইনজীবীদের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ‘বিচার বিভাগের সংস্কার/পুনর্গঠন’ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সাবেক সহসম্পাদক আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে দেশের আপামর জনগণ এই আওয়ামী লীগের বিচার বিভাগের কাছ থেকে কোনো বিচার পায়নি।…আইনের শাসন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদার বাংলাদেশ গড়তে হলে সুপ্রিম কোর্টের আমূল পুনর্গঠন ছাড়া জনগণের বিজয় নস্যাৎ হয়ে যাবে। বিচারপতি নিয়োগের আইন, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে নিয়োগে আইনসহ বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করে বিচার বিভাগকে প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও সংবিধান সম্মত জনগণের বিচার বিভাগে পরিণত করতে হবে। লিখিত বক্তব্যে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সব বিচারপতি এবং হাইকোর্ট বিভাগের ৫০ বিচারপতির পদত্যাগসহ ছয়টি প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন, আইনজীবী মহসিন রশিদ, সাবেক সম্পাদক মো. গিয়াউদ্দিন আহমেদ, সাবেক সহসম্পাদক এ বি এম রফিকুল হক তালুকদার, আইনজীবী শাহ আহমেদ বাদল ও এম আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।