মালয়েশিয়া শ্রমবাজার পরিস্থিতি নিয়ে মানবাধিকার কমিশনের আদেশ
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মীদের পাঠানো নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি ও শেষ সময়ে কর্মীদের যেতে না পারা নিয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে কয়েকটি আদেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এতে বলা হয়, প্রতারণার মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে নামসর্বস্ব কোম্পানিকে শ্রমিক পাঠানো ও মালয়েশিয়ায় গিয়ে কাজ না পাওয়ার অভিযোগ তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে কমিশনকে জানাতে হবে।
কমিশনের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নিয়ে আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার মানবাধিকার কমিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব আদেশের কথা জানানো হয়েছে।
মে মাসের শেষ ১০ দিনে প্রায় ৩০ হাজার যাত্রীর কাছ থেকে বিমানের টিকিটের কথা বলে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে আদেশে।
আদেশে বলা হয়েছে, প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে বিমানভাড়ার নামে অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভিসা ও ছাড়পত্র পেয়েও যথাসময়ে বিপুলসংখ্যক শ্রমিক মালয়েশিয়ায় যেতে না পারার পেছনে দায়ী প্রতিষ্ঠান ও জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ভিসাপ্রাপ্ত শ্রমিকদের মালয়েশিয়ায় পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে এসেছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ (সুয়োমোটো) গ্রহণ করেছে।
মানবাধিকার কমিশন বলছে, সময়সীমার শেষ দিনে গত শুক্রবার মালয়েশিয়ায় যাওয়ার শেষ চেষ্টা করতে টিকিট ছাড়াই ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিড় জমান হাজারো মানুষ। শেষ পর্যন্ত যেতে না পেরে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ১ জুন থেকে দেশটিতে আর নতুন বিদেশি শ্রমিক ঢুকতে পারবেন না। সে হিসাবে আবারও অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ হয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়া।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সক্রিয় স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকদের হয়রানি ও তাঁদের নিকট থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং সেই দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কর্মীরা বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন বলে জানা যায়। এতে চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে তাঁদের মানবাধিকার। এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অনতিবিলম্বে তদন্ত করে প্রভাবশালী স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন বলে মনে করছে কমিশন।
আরও পড়ুন:
বারবার চক্র, বারবার বন্ধ মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার
চূড়ান্ত ছাড়পত্র নিয়েও মালয়েশিয়া যেতে পারলেন না ১৭ হাজার কর্মী
এমপি চিনি না, দায়ী হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী