খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অষ্টম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ। গত বৃহস্পতিবার চার বছরের জন্য তাঁকে এ নিয়োগ দেওয়া হয়। এদিকে সাত বছর আগে অন্যের টেকনিক্যাল পেপার নকল করে প্রকাশ ও বিদেশে এক সম্মেলনে উপস্থাপন করার অভিযোগে কুয়েট সিন্ডিকেট তাঁকে শাস্তি দিয়েছিল।
অভিযোগে উঠেছিল, ২০০৪ সালে মিতসুবিশি মোটরসের টেকনিক্যাল রিভিউতে (নম্বর-১৬) প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রবন্ধের প্রায় শতভাগ নকল করে মুহাম্মদ মাছুদসহ তিন শিক্ষক ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ভলিউম-২ ইস্যু-১) এবং আইসিএমআইএমই ২০১৩-এ দুটি টেকনিক্যাল পেপার প্রকাশ করেন। ওই গবেষণাপত্রের বিষয়বস্তু, ফলাফলসহ অন্য লেখকের গবেষণার সঙ্গে প্রায় শতভাগ মিল ছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তদন্ত কমিটি তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটের ৫৮তম সভায় অধ্যাপক মাছুদসহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই সিন্ডিকেটের ৬২তম সভায় তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি তিন বছরের জন্য স্থগিত এবং পাঁচ বছরের জন্য উচ্চতর স্কেল স্থগিত করা হয়। শাস্তি হয় অন্য দুই শিক্ষকেরও।
গতকাল শুক্রবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। তৎকালীন উপাচার্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁকে ফাঁসিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
কুয়েটের তৎকালীন উপাচার্য মুহাম্মদ আলমগীর প্রথম আলোকে ওই সময় বলেছিলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকেরা বিদেশে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে ও পরে একটি জার্নালে তাঁদের ওই পেপার প্রকাশ করেন। পেপারগুলো দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় সত্যতা নিরূপণের জন্য পাঠানো হয়। তাঁদের প্রকাশিত পেপার প্রায় শতভাগ নকল বলে জানানো হয়েছে। গতকাল চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ১৯৯৮ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), খুলনা থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং (মেকানিক্যাল) ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। একই সালে একই প্রতিষ্ঠানে প্রভাষক ও ২০০৩ সালে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০০৯ সালে সহযোগী অধ্যাপক ও ২০১১ সালে অধ্যাপক হিসেবে কুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে যোগ দেন। তিনি জাপানের নাগোয়া ইউনিভার্সিটি থেকে ২০০৩ সালে এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ২০০৬ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
ছাত্রজীবনে তিনি কুয়েট শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন বলে জানা গেছে।