জিম্মি জাহাজটি কীভাবে মুক্ত হলো, জানাল মালিকপক্ষ কেএসআরএম
‘শনিবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত তিনটা নাগাদ জাহাজটি থেকে নেমে যায় সোমালিয়ার দস্যুরা। এরপরই ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুটি যুদ্ধজাহাজের পাহারায় এমভি আবদুল্লাহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারমিয়া বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়। তার আগে দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতা করে জাহাজটি ছাড়িয়ে আনতে এক মাস নির্ঘুম রাত কেটেছে আমাদের।’
জাহাজটি মুক্ত করার বর্ণনা এভাবেই দিয়েছেন এমভি আবদুল্লাহর মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত। আজ রোববার দুপুরে নগরের আগ্রাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে জাহাজটি মুক্ত করতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, তা বর্ণনা করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে কেএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক করিম উদ্দিন ও সরওয়ার জাহান রোকন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম ও গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে শাহরিয়ার জাহান বলেন, জাহাজটি ১৯ বা ২০ এপ্রিল আরব আমিরাতের আল হারমিয়া বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। সেখান থেকে উড়োজাহাজে বা একই জাহাজে করে নাবিকদের চট্টগ্রামে ফিরিয়ে আনা হবে। এটি নির্ভর করছে নাবিকদের ওপর, তাঁরা কীভাবে ফিরে আসতে চান।
শাহরিয়ার জাহান আরও বলেন, ‘গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে জাহাজটি জিম্মি করার পর প্রথম দিন থেকেই আমরা কাজ শুরু করি। আন্তর্জাতিক নানা সংস্থার সহায়তা নিই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকেও বিষয়টি তদারকির নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী—তিনজনই সব সময় সহযোগিতা করে আসছিলেন। নাবিকদের নিরাপত্তা নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন ছিলাম। আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীর অভিযানের কথা শুনে দ্রুত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছি। আধা ঘণ্টার মধ্যেই অভিযানের প্রস্তুতিতে থাকা যুদ্ধজাহাজ দ্রুত সরে গেছে। কারণ, অভিযান হলে নাবিকদের জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যেত।’
কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম বলেন, ‘জাহাজের অবস্থান আমরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে আসছিলাম। নাবিকদের মুক্ত করতে সোমালিয়া, কেনিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র—এই চার দেশের নিয়মকানুন মেনেই সমঝোতা হয়েছে। সবকিছুই বৈধভাবেই শেষ হয়েছে। তবে সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী অনেক কিছু আমরা প্রকাশ করতে পারছি না।’
মেহেরুল করিম আরও বলেন, সব প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর গতকাল শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ৯টি স্পিডবোটে একে একে নেমে যায় ৬৫ জলদস্যু। মুক্ত হয় ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ।