উদীচীর সংস্কৃতিকর্মী সমাবেশ: সহিংসতাকারীদের শাস্তি দাবি
ঐতিহ্যবাহী ভাস্কর্য, শিল্প, শিল্পাঙ্গন ধ্বংসসহ সব ধরনের সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংস্কৃতিকর্মী সমাবেশ থেকে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলা ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, ডাকাতি, হত্যাকাণ্ড প্রতিহত করা এবং জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত, গণতান্ত্রিক দেশ গড়ার আহ্বানও জানানো হয় এই সংস্কৃতিকর্মী সমাবেশে। পাশাপাশি ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে অর্জিত অভূতপূর্ব বিজয় যেন হাতছাড়া না হয়, এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।
সমাবেশে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, ছাত্র-জনতা বিজয়ের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিকভাবে সাম্প্রদায়িক হামলা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, ডাকাতি, হত্যাকাণ্ড এবং ঐতিহ্যবাহী ভাস্কর্য-শিল্প-শিল্পাঙ্গন ধ্বংসের ঘটনা ঘটে চলেছে। এসব হামলার প্রত্যক্ষ শিকার হচ্ছেন ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের উপাসনালয়, বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নির্বিচারে হামলা-লুটপাট চালানো হচ্ছে। নতুন সরকারকে অবিলম্বে সব ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ করে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরসহ মুক্তিযুদ্ধের নানা ঐতিহাসিক নিদর্শনের সংগ্রহশালা। ভাঙচুর করা হয়েছে বাংলা একাডেমি চত্বরে মুক্তিযুদ্ধের সাত বীরশ্রেষ্ঠর ম্যুরাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বর। হামলা হয়েছে শিশু একাডেমি ও কুড়িগ্রামের শিল্পকলা ভবনে। খুলনায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ আর্কাইভ। দেশে এমন অস্থির সময় আগেও এসেছে। গভীর অন্ধকার থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংস্কৃতির শক্তিতে নতুন জাতীয় উজ্জীবন ঘটাতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনটির সহসভাপতি হাবিবুল আলম, প্রবীর সরদার, জামসেদ আনোয়ার, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক প্রণয় সাহা ও যুব ইউনিয়নের সভাপতি খান আসাদুজ্জামান।
এই সমাবেশে সমবেত সংগীত পরিবেশন করেন উদীচীর সংগীত বিভাগের শিল্পীরা। একক সংগীত পরিবেশন করেন সুরাইয়া পারভীন, বুলবুল ইসলাম, সাজেদা বেগম, শাওন কুমার রায়। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন মনীষা মজুমদার।