চট্টগ্রাম ওয়াসায় অনিয়মের তদন্ত শুরু, এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন
চট্টগ্রাম ওয়াসার বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে কমিটি। আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কমিটির সদস্যরা ওয়াসা ভবনে গিয়ে বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করেছেন। সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
তিন সদস্যের কমিটিতে প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের মহাপরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান। তিনি আজ সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গণমাধ্যমে ওয়াসা নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনের সূত্র ধরে এই তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তাঁরা ওয়াসা ভবনে গিয়ে বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করেছেন। এসব বিশ্লেষণ করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দেবেন।
ওয়াসার নানা অনিয়ম ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রথম আলোয় বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সর্বশেষ ৩ সেপ্টেম্বর প্রথম পাতায় ‘ক্ষমতার জোরে টিকে আছেন ফজলুল্লাহ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে দায়িত্ব পালন করছেন এ কে এম ফজলুল্লাহ। তাঁর আমলে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশনের জন্য একের পর এক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কোনোটিই তিনি নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারেননি। ব্যয় বেড়েছে দফায় দফায়।
আবার পানি চুরি, বছর বছর দাম বাড়ানো, অপচয় কমাতে না পারা ও দুর্নীতির অভিযোগ আসায় বারবার সমালোচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ ৮১ বছর বয়সী এই প্রকৌশলী। কিন্তু ‘ক্ষমতার জোরে’ এখনো তিনি টিকে আছেন। গত বছরের আগস্টে তাঁকে অষ্টমবারের মতো এমডি পদে নিয়োগ দেয় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকার।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ৬ জুলাই প্রথমবার চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে এক বছরের জন্য নিয়োগ পান এ কে এম ফজলুল্লাহ। এরপর আরও এক বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে ঢাকা ওয়াসার আদলে চট্টগ্রাম ওয়াসায়ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ তৈরি করা হয়। ওয়াসা বোর্ডও পুনর্গঠন করা হয়। তখন এমডি পদে নিয়োগ পান তৎকালীন চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলুল্লাহ। সেই থেকে এমডি পদে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
ক্যাবের বিবৃতি
এদিকে তদন্ত কমিটির কার্যক্রম নিয়ে আজ সন্ধ্যায় বিবৃতি দিয়েছে ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। প্রতিষ্ঠানটির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন গণমাধ্যমে এই বিবৃতি পাঠান। এতে বলা হয়, এখনো শহরের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ সুপেয় পানি পান না। কিন্তু বছর বছর পানির দাম বাড়ানো হচ্ছে। অথচ এমডি এ কে এম ফজলুল্লাহকে চেয়ারে বসিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তাঁদের অধীনে থেকে কেউ অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য দেবেন না। অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আগে এ কে এম ফজলুল্লাহকে পদ থেকে সরাতে হবে। পদ ছাড়লে তখনই সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব।