গুলিতে হেফাজতের কর্মী নিহতের মামলায় সাবেক ওসির রিমান্ড

হাটহাজারী থানার সাবেক ওসি রফিকুল ইসলামছবি: সংগৃহীত

সাড়ে তিন বছর আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে গুলিতে হেফাজতে ইসলামের কর্মী নিহত হওয়ার মামলায় হাটহাজারী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তাঁর নাম রফিকুল ইসলাম। আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হারুন শুনানি শেষে এই আদশ দেন।

হাটহাজারী থানার ওসি হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার রফিকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হাটহাজারী থানা-পুলিশ সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত ২৩ আগস্ট হেফাজতের কর্মী রফিকুল ইসলামের বাবা আবদুল জব্বার বাদী হয়ে সাবেক ওসি রফিকুল ইসলামসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, চট্টগ্রাম জেলার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম রশিদুল হক, হাটহাজারী সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম ও শাহাদাত হোসেন, হাটহাজারী থানার সাবেক ওসি রফিকুল ইসলাম, পরিদর্শক রাজীব শর্মা, কেশব চক্রবর্তী, শফিকুল ইসলাম ও আমির হোসেন, সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) মুকিব হাসান, কবির হোসেন ও জসীমউদ্দীন। ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মুহুরী, হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদুল আলম ও ইউনুস গণি চৌধুরী, হাটহাজারী পৌরসভার সাবেক প্রশাসক মনজুরুল আলম চৌধুরী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নাসির হায়দার।

এ ছাড়া হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মইনুদ্দিন রুহি ও মাওলানা সলিমুল্লাহকে আসামি করা হয়েছে। তাঁরা হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির শাহ আহমেদ শফির ছেলে আনাস মাদানীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর আগমনের প্রতিবাদে সেদিন দুপুরে হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে মিছিল বের করেছিলেন হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। সেখানে গুলিতে মাদ্রাসার চার শিক্ষার্থী নিহত হন। সেদিন মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা মিছিল বের করলে পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে। গুলির ঘটনায় আসামিরা জড়িত।

এদিকে ঘটনার দিন হাটহাজারী থানা, ভূমি অফিস ও সরকারি ডাকবাংলোয় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় হেফাজতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৯টি মামলা হয়। এসব মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলাগুলো এখনো তদন্তাধীন।

নিহত হেফাজতের কর্মী রফিকুল ইসলামের বাবা আবদুল জব্বার প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের চাপে মামলা করতে পারেননি। এখন তিনি ছেলে হত্যার বিচার চান।