নিহত ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় ৪৫ শিক্ষক–শিল্পীর ক্ষোভ

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে প্রাণহানি ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের ৪৫ জন শিক্ষক, শিল্পী, লেখক ও নির্মাতা। তাঁরা অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে আন্দোলন ঘিরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তারসহ সব ধরনের নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ সোমবার এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানান শিক্ষক, শিল্পী, লেখক ও নির্মাতারা। বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপি–জামায়াত ট্যাগ দিয়ে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা কিংবা জাস্টিফাই করতে পারবে না সরকার। নৃশংসতা ও দেশকে সর্বনাশের হাত থেকে বাঁচাতে নতুন সংঘাতের দিকে না যাওয়ার জন্য সরকার ও দায়িত্বশীল মহলকে আহ্বান জানান তাঁরা।

বিবৃতি প্রদানকারীরা মনে করেন, কোটা সংস্কারের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী অপ্রয়োজনীয়ভাবে উসকানি দিয়েছেন। তাঁরা বলেন, ‘এমনকি প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে কয়েকজন সাংবাদিকের শিশুতোষ উসকানিও আমরা লক্ষ করেছি।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এরপর সরকার একদিকে তথাকথিত সংলাপের ডাক দিতে থাকে, অন্যদিকে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক হয়রানির পথ বেছে নেয় বলেও। সংঘর্ষ–সংঘাতে কতজন সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনতাকে হত্যা করা হয়েছে, তারও কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই।

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার পুরোনো ‘জামায়াত-বিএনপি’ ট্রাম্পকার্ড ব্যবহার করতে শুরু করেছে। প্রায় সব টেলিভিশন চ্যানেলেই সরকারি তোষামোদকারী বিশ্লেষকেরা সেই একই বয়ান হাজির করছেন।

বিবৃতি প্রদানকারীরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মানস চৌধুরী, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস ও অধ্যাপক মীর্জা তাসলিমা সুলতানা, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন, অধ্যাপক শাতিল সিরাজ, সহযোগী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার ও সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহীল বাকী, ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্তী ও সহযোগী অধ্যাপক মো. আমিরুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌভিক রেজা, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রবিউল আলম, নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক হাবিব জাকারিয়া ও সহযোগী অধ্যাপক কাজী শুসমিন আফসানা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক খন্দকার হাসিবুল কবির, শিক্ষক তানজিম ওয়াহাব। অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, গায়ক অরূপ রাহী, গবেষক মাহা মির্জা, চলচ্চিত্রনির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী, কামার আহমাদ সাইমন, পিপলু আর খান, মেজবাউর রহমান সুমন, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, আশফাক নিপুণ, ঋতু সাত্তার, তানিম নূর, সালেহ সোবহান, হুমায়রা বিলকিস, সারা আফরীন, জাহিন ফারুক আমিন, স্থপতি আছিয়া করিম ও সুহাইলি ফারজানা, চিত্রশিল্পী আব্দুল হালিম, সংগীত পরিচালক আরমীন মূসা, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান ও মাহবুব মোর্শেদ, নাট্যকার বাকার বকুল, অধিকারকর্মী বাকি বিল্লাহ, শিল্পী মুনেম ওয়াসিফ ও বটতলার ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর মোহাম্মদ আলী হায়দার।