চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভে হামলা

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ১৫ জুলাইছবি: মোশাররফ শাহ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভে হামলা চালিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসে কাটা পাহাড় সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এতে এক নারী শিক্ষার্থীসহ দুজন আহত হয়েছেন।

এর আগে রোববার রাত সোয়া ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট বিক্ষোভ শুরু করেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এই বিক্ষোভে ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘চেয়েছিলাম ন্যায়বিচার, হয়ে গেলাম রাজাকার’সহ নানা স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগের চার–পাঁচজন নেতা–কর্মী সেখানে আসেন। এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝেই কয়েকটি বাজি ফোটান। এরপরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পিছু হটেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা কাটা পাহাড় দিয়ে শহীদ মিনারে মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা তাঁদের ধাওয়া দেন। পরে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। এ সময় চার থেকে পাঁচজনকে মারধর করেন ছাত্রলীগের এই নেতা–কর্মীরা।

আন্দোলনে থাকা শারমিন সুলতানা নামের এক শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, কোটা সংস্কারের আন্দোলনে হঠাৎ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা–কর্মী লাঠি নিয়ে হামলা করেন। আন্দোলনরত কয়েকজনকে চড়–থাপ্পড় দেন। নারী শিক্ষার্থীদের গালাগাল করেন। এতে চার–পাঁচজন আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এরপর একে একে ছাত্রলীগের সব উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা জিরো পয়েন্টে আসেন। সেখানে এসে ‘শেখ হাসিনা সংসদে, আমরা আছি রাজপথে’, ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ইত্যাদি স্লোগান দেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে লাঠি হাতে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। রাত সাড়ে এগারোটায় ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন কাটা পাহাড় সড়কে
ছবি: মোশাররফ শাহ

ছাত্রলীগের যেসব নেতা-কর্মী এ হামলা করেন, তাঁদের মধ্যে দুজনের পরিচয় ঘটনাস্থলেই নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর মধ্যে একজন আবরার শাহরিয়ার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও কনকর্ড উপপক্ষের নেতা। ক্যাম্পাসে তিনি নিজেকে সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন। জানতে চাইলে তিনি ঘটনাস্থলেই বলেন, ‘রাজাকার নামে কোনো স্লোগান হবে না। হলেই আমরা এটি প্রতিহত করব।’

অন্য আরেক নেতা হলেন মোহাম্মদ শরিফ উদ্দিন। তিনিও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন। ক্যাম্পাসে তিনি নিজেকে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন।

জানতে চাইলে শরিফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। রাজাকার নিয়ে স্লোগান হয়েছে, তাই তিনি প্রতিরোধ করেছেন।