বিশেষ সাক্ষাৎকার: নুরুল ইসলাম
উন্নয়নের জন্য ন্যূনতম আইনের শাসন দরকার
খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক নুরুল ইসলাম গতকাল ওয়াশিংটনে মারা গেছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দেশের অর্থনীতির নানা দিক ও সামগ্রিক উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেন। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাক্ষাৎকারটি আবার প্রকাশ করা হলো।
প্রথম আলো : ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার ব্যাপারে যে ধরনের পূর্বাভাস রয়েছে, সে বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
নুরুল ইসলাম : যে আয় হলে একটি দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে পারে, সেটা কিন্তু পরিবর্তিত হয়। তাই বাংলাদেশের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত আয় বাড়ানো। আমাদের প্রবৃদ্ধি এখন ৬। সময়ের ধারাবাহিকতায় ৬ থেকে ৭, ৭ থেকে ৮ এবং ৮ থেকে ১০ শতাংশে বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। সেটাই হোক আমাদের লক্ষ্য।
প্রথম আলো : সামাজিক সূচকগুলোয় ভারতকে ছাড়িয়ে যাওয়াকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
নুরুল ইসলাম : সামাজিক সূচকের গড় অগ্রগতিতে আমরা যে ভারতের তুলনায় এগিয়ে আছি, তার সঙ্গে একমত। কিন্তু ভারত একটি নয়, ২৯টি রাজ্য নিয়ে ভারতীয় ইউনিয়ন। ভারতের উন্নত রাজ্যগুলোর অবস্থা আমাদের চেয়ে ভালো। সুতরাং, গড় করে তুলনা করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
প্রথম আলো : বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনৈক্য আরও প্রলম্বিত হলেও জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কি থমকে যেতে পারে?
নুরুল ইসলাম : রাজনৈতিক অস্থিরতা নিশ্চয় উন্নয়নকে ব্যাহত করে। এটা সব দেশে করে। আমাদের দেশেও করে। কতটা, কখন, কী মাত্রায় করবে, সেটা বলা মুশকিল। সবচেয়ে বড় হচ্ছে, মানুষের প্রত্যাশা কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমি যদি মনে করি সবকিছুই অস্থির, কোনো কিছুর ঠিক-ঠিকানা নেই, তাহলে আমি বিনিয়োগ করব না। রাজনৈতিক অস্থিরতার মাত্রাগত হ্রাস-বৃদ্ধির ওপর অনেকটা নির্ভর করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অবকাঠামো, যোগাযোগ, পরিবহন ও জ্বালানি—সেগুলো কীভাবে কাজ করে। ব্যবসা করতে হলে কতগুলো বিধিবিধান লাগে। রাজনৈতিক অস্থিরতার চেয়ে এগুলো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক অস্থিরতা কোন পর্যায়ে গেলে উন্নয়নকে ব্যাহত করে, সেটা একেক দেশের ওপর নির্ভর করে। রাষ্ট্রের অস্থিরতার বিষয়ে আমরা তো অভ্যস্ত। অভ্যাস হয়ে গেলে প্রচুর কোনো ক্ষতি হওয়ার কথা নয়, যদি না রাজনৈতিক অস্থিরতা অনেক বেড়ে যায়।
প্রথম আলো : রেমিট্যান্স-নির্ভর বৈদেশিক মুদ্রার বড় রিজার্ভ নিয়ে কি আমরা স্বস্তিতে থাকতে পারি?
নুরুল ইসলাম : আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। কী কারণে বাড়ে, সেটা দেখতে হবে। যদি উন্নয়ন হ্রাস পাওয়ার কারণে আমদানি কমে যায়, তাহলেও রিজার্ভ বাড়বে। সেটা অভিপ্রেত নয়। আর যদি রপ্তানি বাড়ার কারণে রিজার্ভ বাড়ে, তাহলে ভালো হওয়ার কথা। সুতরাং, কেবল রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ার খবরই যথেষ্ট নয়।
প্রথম আলো : ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে গোল্ডম্যান স্যাকস প্রথম সম্ভাবনাময় শীর্ষ ১১-এর মধ্যে বাংলাদেশকে রেখেছে। সম্প্রতি ইকোনমিস্ট বলছে, অনিশ্চয়তার মধ্যে সাফল্য অর্জন করার একটি মডেলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। আপনি কীভাবে দেখেন?
নুরুল ইসলাম : গোল্ডম্যান স্যাকস বা ইকোনমিস্ট কী বলেছে, তা নিয়ে যে আমাদের এত আলোচনা, এর মধ্যে কিছুটা আমাদের আত্মবিশ্বাসের অভাবের প্রতিফলন ঘটে। ওরা আমাদের ভালো বললে আমরা ভালো, খারাপ বললে খারাপ হব? ওরা আমাদের দেশ সম্পর্কে কী জানে? ওরা যে ভবিষ্যদ্বাণী করে, তা আমি বিশ্বাস করি না। কারণ তারা কীভাবে ও কী তথ্যের ভিত্তিতে এর বিশ্লেষণ করে, তা আমি জানি না। আমাদের নিজেদের যে বিশ্লেষণ ও অনুসন্ধান, তা আমি বিশ্বাস করি।
প্রথম আলো : আইয়ুব আমলে বলা হতো, আগে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র। এখনো অনেকে সেই যুক্তি দিচ্ছেন, কীভাবে দেখছেন?
নুরুল ইসলাম : উন্নয়ন ও গণতন্ত্র—এই দুটোয় সম্পর্ক বড় কঠিন। আপনার প্রশ্ন তো এটাই যে, গণতন্ত্র না হলে উন্নয়ন হবে কি না? ইতিহাস এটাই বলে যে, উন্নয়ন হতে পারে গণতন্ত্রে বা বিনা গণতন্ত্রে। এটা নির্ভর করে নেতৃত্ব উন্নয়নের প্রতি কতটুকু সংকল্পবদ্ধ এবং কী নীতি অনুসরণ করে, তার ওপর।
প্রথম আলো : আইয়ুব খান তাঁর আমলে কিছু উন্নয়ন কি করতে পেরেছিলেন?
নুরুল ইসলাম : পেরেছিলেন। শেষে তো ধ্বংস হলো। দুটো কথা আছে। উন্নয়নের সূচনা যেকোনো অবস্থায় ঘটতে পারে। গণতন্ত্রে, বিনা গণতন্ত্রে, অর্ধগণতন্ত্রে, কমিউনিজমে, সমাজতন্ত্রে—যেকোনো রাজনৈতিক অবস্থায় উন্নয়নের সূচনা ঘটতে পারে; যদি নেতৃত্ব সেটা চায়। এর সঙ্গে গণতন্ত্র থাকা না-থাকার কোনো সম্পর্ক নেই। ইতিহাস বলে, উন্নয়ন গণতন্ত্রে হয়েছে, উন্নয়ন স্বৈরতন্ত্রে হয়েছে। আবার ইতিহাস এটাও বলে যে, অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্বৈরতন্ত্রে যখন রাজনীতি ধসে পড়ে, তখন অর্থনীতিতেও ভেঙে পড়ে। আইয়ুবের সময়ে অর্থনীতিতে উন্নতি ঘটেছিল। তারপর যখন রাজনীতি ভেঙে গেল, তখন অর্থনীতিও ভেঙে গেল। আরেকটি হচ্ছে, উন্নয়ন যখন উচ্চ স্তরে চলে যায়, মানুষ তখন অবস্থার উন্নতি দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে চায় না, তখন তারা রাজনৈতিক অধিকার চায়। এর আগ পর্যন্ত তারা কাপড়চোপড় ও জীবিকা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কাজেই অনেকে বলেন, আর্থিক অবস্থা যখন অনেক ভালো হবে, যখন আর নিজের খাওয়া-দাওয়া, অর্থাৎ বস্তুগত সব চাহিদা যখন পূরণ হয়ে যাবে, মানুষ তখন রাজনৈতিক অধিকারের দিকে নজর দেবে। উন্নয়নের সঙ্গে গণতন্ত্রের এই হচ্ছে সম্পর্ক।
প্রথম আলো : বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আপনি কী সুপারিশ রাখবেন?
নুরুল ইসলাম : এ সম্পর্কে আমার কোনো সুপারিশ নেই। বাংলাদেশ বেশ ভালোই করছে। রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে আমার কোনো মত নেই। অর্থনৈতিক অবস্থা যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে ভালো। তবে যে জিনিসটা অত্যন্ত জরুরি, তা হলো অবকাঠামো, সড়ক যোগাযোগ, জ্বালানি, মহাসড়ক ও বন্দর। এর মধ্যে নিয়মিতভাবে সস্তায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে ন্যূনতম আইনের শাসনও থাকতে হবে।
প্রথম আলো : অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ লাগবে। আর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তো স্থিতিশীলতা চাইবেন?
নুরুল ইসলাম : সঠিক। তবে আমাদের বিনিয়োগকারীদের মতো তাঁদেরও অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হবে। তাঁরাও তো জানেন, বাংলাদেশ মোটামুটি অস্থিরতার মধ্যে থাকে। তবে অস্থিরতার মাত্রা যদি আকস্মিকভাবে উঁচুতে ওঠে, তখন তাঁরা দ্বিধান্বিত হন।
প্রথম আলো : আপনি ১৯৭৫ সালের পরে বিদেশেই থাকলেন। এটা কি আপনাকে কখনো দুঃখ দেয়?
নুরুল ইসলাম : বিদেশে থাকা আমাকে দুঃখ দেয় কি না, এর উত্তরের কোনো সামাজিক তাৎপর্য নেই।
প্রথম আলো : যদিও আপনি বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে বিস্তর লেখালেখি করেছেন, তদুপরি কখনো...
নুরুল ইসলাম : আমি বিদেশে বহুদিন ধরে আছি। কিন্তু তা সত্ত্বেও যখন জাতিসংঘের কৃষি সংস্থায় চাকরি করতাম, তখন বছরে দুবার দেশে আসতাম। বাংলাদেশের ওপর কাজ করতাম। আমার দায়িত্বের মধ্যে বাংলাদেশও অন্তর্ভুক্ত ছিল। বাংলাদেশের সঙ্গে বরাবরই সম্পৃক্ত থেকেছি। এখন অবসরজীবনেও বাংলাদেশের ওপর অনেক গবেষণা করি। তা ছাড়া, উন্নত তথ্যপ্রযুক্তির কারণে দূরের দূরত্ব অনেকটাই ঘুচে গেছে। তাই পথের দূরত্ব এখন আর তত বেশি প্রভাব ফেলে না।
প্রথম আলো : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি ১১ বছর শিক্ষকতা করেছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং অনেক নিচে নেমেছে। একে আবার ওপরে তুলতে আশু কী করণীয়?
নুরুল ইসলাম : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান কমেছে। সার্বিকভাবে দেশের শিক্ষার মান কমেছে। তবে তাদের মধ্যে অনেক উচ্চ মানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীও রয়েছেন। তাঁরা বিদেশে গিয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছেন।
প্রথম আলো : উত্তরণের উপায়?
নুরুল ইসলাম : শিক্ষক নিয়োগ হতে হবে অবশ্যই মেধার ভিত্তিতে, অন্য কোনো বিবেচনায় নয়। তবে তাঁদের পর্যাপ্ত প্রণোদনা দিতে হবে। বর্তমানে যে বেতন-ভাতা দেওয়া হয়, তাতে তাঁদের পোষাবে না। আমার বিষয়ে (অর্থনীতি) কোনো দিনই ভালো শিক্ষক পাওয়া যাবে না। কারণ, শিক্ষকতা ছাড়াও তাঁদেরকে অন্য কাজ করে তাঁদের প্রয়োজন মেটাতে হবে। তাই তাঁদেরকে উপযুক্ত বেতন-ভাতা না দিলে তাঁরা বিদেশে চলে যাবেন। সুতরাং, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভালো শিক্ষক পেতে ভালো বেতন দিতে হবে। তাঁদের গবেষণায় টাকা দিতে হবে। তা না হলে তাঁরা থাকবেন না।
প্রথম আলো : বাংলাদেশ যাতে এগিয়ে যেতে পারে, সে জন্য কতিপয় ভবিষ্যৎমুখী সুপারিশ করুন। আশু কী করণীয়?
নুরুল ইসলাম : সাধারণভাবে বলা যায় প্রতিষ্ঠান গড়তে হবে, যারা নীতি প্রণয়ন, সমন্বয় ও বাস্তবায়ন করবে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর গুণমান বাড়ানো হলো প্রথম কাজ। দ্বিতীয় হলো আইনের শাসন। আইনের শাসন যে আছে, সেই বিশ্বাস মানুষের মধ্যে থাকতে হবে। ভর্তুকি দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে বিদ্যুৎ দেওয়া ভালো কথা নয়। জ্বালানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুত নিতে হবে।
প্রথম আলো : আপনার কী মত?
নুরুল ইসলাম : পরিবেশগত ক্ষতির আশঙ্কা যতই থাকুক না কেন, কয়লা ছাড়া আমি জ্বালানির অন্য কোনো বিকল্প দেখতে পাচ্ছি না। সাম্প্রতিক কালে কয়লায় নতুন ক্লিন প্রযুক্তি বেরিয়েছে। কয়লা আহরণে চেষ্টা করতে হবে। সমুদ্রসীমায় দ্রুততার সঙ্গে এবং সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপক ভিত্তিতে গ্যাস-তেলের জন্য অনুসন্ধান চালাতে হবে।
প্রথম আলো : কোন খাতের সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিতে বলবেন?
নুরুল ইসলাম : অবকাঠামোসহ ওপরে যেসব বিষয় বলেছি, তার সঙ্গে, বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতে নজর দিতে হবে। ব্যাংক-খেলাপি বন্ধ করতে হবে। যা সম্প্রতি ঘটে গেছে, এর যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তার সুরক্ষা দিতে হবে।
প্রথম আলো : শেয়ারবাজারের উত্থান-পতন নিয়ে আপনার ভাবনা কী?
নুরুল ইসলাম : আমার মত হলো, বর্তমান অবস্থায় স্টক মার্কেট রাখারই কোনো দরকার নেই। সব মনোযোগ ঢেলে দিতে হবে কী করে ব্যাংকিং খাতকে দক্ষ করে গড়ে তোলা যায়।
প্রথম আলো : যাঁরা শেয়ার কেনেন, তাঁরা কিন্তু আপনার সুপারিশে বিচলিত হবেন। মাথায় হাত দেবেন।
নুরুল ইসলাম : আমি মনে করি, জাপান, কোরিয়াসহ গোটা পূর্ব এশিয়ার অভিজ্ঞতা হচ্ছে প্রাথমিক পর্যায়ে স্টক মার্কেট নিয়ে মাথা না ঘামানো। বিশ্বব্যাংক যদিও এর সপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি, আমাদের বর্তমান অবস্থানে এর দরকার নেই। তা ছাড়া, আমার যেখানে ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতার অভাব আছে, সামর্থ্য সীমিত, তাই আমাকে সবটুকু মনোযোগ ও দক্ষতা ব্যাংকিং খাতে ঢেলে দিতে হবে।
প্রথম আলো : অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সম্পর্ক রয়েছে। আপনি কীভাবে দেখেন?
নুরুল ইসলাম : উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীরা দুটো বিষয় দেখবেন। উদাহরণস্বরূপ, ভূমির যথেষ্ট সংকট রয়েছে। ভূমির অধিকার ও মালিকানা তাই খুব স্পষ্ট নয়। এ নিয়ে জটিলতা লেগে থাকে। জমি কার, তা চিহ্নিত করতে হবে। এখানে অনিশ্চয়তা থাকলে ভূমি ক্রয় করতে গিয়ে সাংঘাতিক কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়। তাই কনট্রাক্ট এনফোর্সমেন্ট এবং প্রপার্টি রাইটসকে সুরক্ষা দিতে হবে। আর এ ধরনের বিরোধ মেটাতে স্বাধীন আদালত লাগবে।
প্রথম আলো : আপনি আপনার একটি বইয়ে দুর্নীতি প্রতিহত করতে একটি নতুন উপায় বাতলেছেন। নির্বাচনী খরচ মেটাতে রাজনৈতিক দলের মালিকানায় ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। এটা বিশ্বের কোথাও কি আছে?
নুরুল ইসলাম : কোথাও নেই। বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতার আলোকে এটা আমি বিচার-বিশ্লেষণের জন্য পেশ করেছি। ব্যাংক ও কলকারখানার মালিকানা যদি দলের থাকে, তাহলে তা থেকে অর্জিত মুনাফা দিয়ে নির্বাচনী ব্যয় মেটানো যাবে। যিনিই নির্বাচন করতে চাইবেন, তাঁরই টাকার দরকার পড়বে। নিজের না থাকলে ধার করতে হবে। আর নির্বাচনে জয়ী হলে তাঁকে তা শোধ করতে হবে। এখানেই নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের জীবাণু ঢুকে যাচ্ছে। এটা রুখতেই আমার এই প্রস্তাব।
প্রথম আলো : আপনাকে ধন্যবাদ।
নুরুল ইসলাম : ধন্যবাদ।
(সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান। তিনি ২০২১ সালে মারা যান)