ঢাকার সদরঘাটে লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সার্ভেয়ারদের দুর্বলতা থাকলে তাঁদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পয়লা বৈশাখের ছুটির পর আজ সোমবার প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ঈদের দিন বিকেলে সদরঘাটের ১১ নম্বর পন্টুনে এমভি তাসরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ নামে দুটি লঞ্চ রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। বেলা তিনটার কিছুক্ষণ আগে এই দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ফারহান-৬ নামের আরেকটি লঞ্চকে পন্টুনে ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়।
সে সময় এমভি তাসরিফ-৪-এর রশি ছিঁড়ে পন্টুনে অপেক্ষমাণ পাঁচ যাত্রীকে আঘাত করে। এতে তাঁরা মারা যান। এই ঘটনায় করা মামলায় দুই লঞ্চের পাঁচ কর্মীকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়।
আজ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অভ্যন্তরীণ নৌপথে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, সেটি সদরঘাটে হোক, ভোলায় হোক, চাঁদপুরে হোক, বরিশালে হোক, মাঝনদীতেই হোক না কেন, প্রতিটির ক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ঈদের দিন আমরা উৎসবমুখর মুডে ছিলাম। সেখানে এমন একটি ঘটনা ঈদের আনন্দকে ম্লান করে দিয়েছে। আপনারা জানেন, জাহাজের (লঞ্চ) সঙ্গে যুক্ত চালকসহ অনেকে পালিয়ে গেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। একটা মামলা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা এই জায়গাটায় খুবই শক্ত আছি। যারা এখানে দোষী, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে জাহাজের রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে। এখানে যদি আমাদের সার্ভেয়ারদের কোনো দুর্বলতা থাকে, সেটাও শাস্তির আওতায় আনা হবে।’
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে বাংলাদেশি ২৩ নাবিকসহ জাহাজ (এমভি আবদুল্লাহ) মুক্ত করতে মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিনিময়ে উদ্ধার, তার তথ্য পাইনি। বহুমাত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে উদ্ধার হয়েছে।’
জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত জাহাজটি এখন দুবাইয়ের উদ্দেশে যাচ্ছে বলে জানান নৌপ্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, জাহাজটি সেখানে ১৯ বা ২০ এপ্রিল পৌঁছাবে। এর পরের বিষয়টি মালিক ও নাবিকদের মধ্যে সমঝোতার ব্যাপার বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মুক্তিপণ নিয়ে সোমালিয়ার উপকূল থেকে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছেড়ে দিয়েছে জলদস্যুরা।
গতকাল শনিবার সোমালিয়ার সময় দিবাগত রাত ১২টা ৮ মিনিটে জলদস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে দেয়। জাহাজটি উদ্ধারে জলদস্যুদের মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।