চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি
হাইকোর্টের রায় স্থগিত, সম্পাদক হিসেবে নিপুণ দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারবেন
জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে নিপুণ আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করা আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিপুণের করা আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) মঞ্জুর করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
আপিল বিভাগের আজকের আদেশের ফলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে চিত্রনায়িকা নিপুণ দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তাঁর অন্যতম আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান।
আদালতে নিপুণের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান।
অন্যদিকে চিত্রনায়ক জায়েদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা ও মজিবুল হক ভূঁইয়া।
এ সময় আদালতকক্ষে নিপুণ ও জায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন প্রাথমিক ফলাফলে জায়েদকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করা হয়। পরে নির্বাচনী আপিল বোর্ডের কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন নিপুণ।
আপিল বোর্ড সমাজসেবা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ ফেব্রুয়ারি সমাজসেবা অধিদপ্তর এক চিঠিতে জানায়, আপিল বোর্ড এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ড জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে।
এ অবস্থায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের ২ ফেব্রুয়ারির চিঠি ও আপিল বোর্ডের ৫ ফেব্রুয়ারির সিদ্ধান্ত নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন জায়েদ। রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত ২ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের রায়ে জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করে নেওয়া আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এর ফলে জায়েদের প্রার্থিতা বৈধতা পায়।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে নিপুণ আপিল বিভাগে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন। পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালনে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
অন্যদিকে গত ৬ মার্চের আদেশ না মানায় নিপুণ ও আপিল বোর্ডের সদস্য মোহাম্মদ হোসেনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদন করেন জায়েদ।
আগের ধারাবাহিকতায় গত ১৪ মার্চ বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আপিল বিভাগ সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থিতাবস্থা দুই পক্ষকে কঠোরভাবে অনুসরণ করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত অবমাননার অভিযোগে করা আবেদন ৪ সপ্তাহের জন্য মুলতবি রাখা হয় (স্ট্যান্ড ওভার)। আদালত বলেন, এই সময়ের মধ্যে কেউ চাইলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে পারবেন।
পরে নিপুণ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত লিভ টু আপিল করেন। আগের ধারাবাহিকতায় নিপুণের করা লিভ টু আপিল ও জায়েদের করা অবমাননার আবেদন আজ আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।