টেলিভিশন ও বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পীদের সম্মানী থেকে ১০ শতাংশ উৎস কর কাটার সিধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন শিল্পীরা। তাঁরা মনে করেন, এ সিদ্ধান্ত অসম্মানজনক। এ সিদ্ধান্ত কতটা নৈতিক, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিল্পীরা।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে এক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
বরেণ্য লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভিন বলেন, তালিকাভুক্ত একজন ‘খ’ শ্রেণির শিল্পী যখন এক থেকে দেড় হাজার টাকা সম্মানী পান, তখন তাঁর কাছ থেকে ১০ শতাংশ কেটে নিলে কয় টাকা থাকে? প্রতিবাদের পাশাপাশি এ সংকটের সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সংগঠনের সহসভাপতি রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রোকাইয়া হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন কবি ও সাংবাদিক নাসির আহমেদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, আবৃত্তিশিল্পী অধ্যাপক রূপা চক্রবর্তী, রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী ফাহিম হোসেন চৌধুরীসহ আরও অনেকে।
বক্তরা বলেন, এ দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে শিল্পীদের হাত ধরে। কিন্তু শিল্পীদের সম্মানী নামমাত্র। সেই সম্মানী থেকে উৎস কর কাটা নীতিগতভাবে সম্ভব কি না, প্রশ্ন আছে।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিল্পী নারায়ণ চন্দ্র শীল বলেন, উৎস কর নেওয়া বন্ধ না করলে শিল্পীর সম্মানী বাড়াতেই হবে।
শিল্পী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘সংস্কৃতিবান্ধব সরকারের সময় এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় কি কেউ ছিল না প্রতিবাদ করার?’ আবৃত্তিশিল্পী রূপা চক্রবর্তী বলেন, ‘বাজারের মূল্য মাথায় রেখে শিল্পীকে সম্মানী দিতে হবে। শিল্পীদের কণ্ঠরোধ হলে আর দেশের ভবিষ্যৎ থাকে না।’
কবি নাসির আহমেদ বলেন, ‘শিল্পীদের সম্মাননা দেওয়ার নামে আসলে অসম্মান করা হচ্ছে। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সময় এই সিদ্ধান্ত বন্ধ হয়েছিল।’ এখনো বেতার ও টেলিভিশনের মধ্যে সম্মানী দেওয়ার বৈষম্য কমছে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের পক্ষ থেকে আগামী ৬ অক্টোবর সব বিভাগীয় শহর এবং ১৩ অক্টোবর সব জেলা শহরে প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, অর্থমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি পাঠাবে তারা। সমাবেশে উপস্থিত থেকে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।