ইতিহাসের উপেক্ষিত নায়কদের তুলে আনতেন সৈয়দ আবুল মকসুদ
ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তির পর পাকিস্তান হয়ে আজকের বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। এর পেছনে কোনো একক ব্যক্তির অবদান নেই। অনেক নায়ক ও ঘটনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ ইতিহাসের সেসব নায়ক ও ঘটনা নিয়ে গবেষণা করেছেন; চেষ্টা করেছেন দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের ক্ষেত্রে সব সময় অবদান রাখতে।
গতকাল শনিবার সাংবাদিক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদের ৭৬তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনায় বক্তারা এভাবে মূল্যায়ন করেন তাঁকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সৈয়দ আবুল মকসুদ স্মৃতি সংসদ। ‘বাংলাদেশে চলমান ইতিহাসচর্চার সংকট ও সৈয়দ আবুল মকসুদ–এর সাধনা’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান বক্তা ছিলেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান।
আলোচনার শুরুতে আবুল মকসুদের লেখা জলাতঙ্ক নামের একটি কবিতা আবৃত্তি করেন আলমগীর হোসেন শান্ত। এ ছাড়া আবুল মকসুদের গবেষণা ও বই নিয়ে একটি পরিচিতিমূলক আলোচনা করেন তাঁর ছেলে সৈয়দ নাসিফ মকসুদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইমরান মাহফুজ।
সলিমুল্লাহ খান তাঁর আলোচনায় মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে নিয়ে সৈয়দ আবুল মকসুদের গবেষণামূলক বইয়ের প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, ব্রিটিশ ভারত থেকে পাকিস্তান আন্দোলন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ পর্যন্ত এই বিশাল সময়জুড়ে ভাসানী রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। আবুল মকসুদ সাংবাদিক হিসেবে ভাসানীর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। এরপর তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়।
লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ আলোচনায় আবুল মকসুদের সমকালীন ইতিহাস নিয়ে লেখা বইগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন সমকালীন কিছু নিয়ে লিখতে গেলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কথা মনে পড়ে। ওই আইনের ভেতরে থাকা দাঁত ও নখ আমাদের কোন ধরনের কামড় দেবে তা অনুমান করা কঠিন। দেশে গণতন্ত্রের সংগ্রাম শক্তিশালী না হলে আর একটি গণতান্ত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠা না হলে আবুল মকসুদের মতো মানুষ তৈরি হবেন না; যাঁরা বহু মানুষ ও ঘটনার মধ্য দিয়ে যে বাংলাদেশের সৃষ্টি তা তুলে ধরবেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন। অনুষ্ঠানে কাজল রশীদ ও দেশের বিশিষ্ট লেখক, কবি ও গবেষকেরা অংশ নেন।