ভুটান–বাংলাদেশ ট্রানজিট চুক্তি সই

বুধবার বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ট্রানজিট চুক্তি সই হয়
ছবি: ইউএনবি

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ট্রানজিট চুক্তি সই হয়েছে। আজ বুধবার ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য মুভমেন্ট অব ট্রাফিক ইন ট্রানজিট অ্যান্ড প্রটোকল’ শিরোনামে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি সই হয়।

ভুটান থেকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এই কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যুগান্তকারী এই চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সহজতর হওয়ার পাশাপাশি বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে। এ ছাড়া সই করা চুক্তি দেশের জন্য কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক, সংযোগ ও কৌশলগত সুবিধা বয়ে আনবে বলে জানান তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আন্তযোগাযোগ বৃদ্ধি ও আঞ্চলিক ভ্যালু চেইন সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে ব্যবসা–বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে চায় বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে চারদিকে স্থলভাগবেষ্টিত ভুটানকে ট্রানজিট চুক্তির আওতায় বিমান, রেল, স্থল, নৌবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ।

এই চুক্তির ফলে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক যোগাযোগে ব্যাপক প্রসার ঘটবে উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভুটান পণ্য রপ্তানি ও আমদানি করলে বাংলাদেশ বিভিন্ন ফি এবং চার্জ লাভ করবে। এ ছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটবে। ট্রানজিট চুক্তি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলো আরও বেশি কর্মক্ষম হবে এবং রাজস্ব আয় বাড়বে। এ ছাড়া কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ বন্দরগুলোর সার্বিক কার্যক্রমে গতি আসবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে তিনি গর্বিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তির প্রাক্কালে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দেওয়ায় তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং বাংলাদেশ–ভুটানের নিবিড় বন্ধুত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্বিপক্ষীয় এই সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত এবং শক্তিশালী করতে উভয় রাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে অর্থ-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য-শিক্ষা এবং যোগাযোগ ও অবকাঠামোসহ সব খাতে অসাধারণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে রূপান্তরিত হয়েছে, পরিচিতি পেয়েছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে।

চুক্তি সইয়ের সময় ভুটানের শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব দাশ তাশি ওমাং; জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য সম্পদবিষয়ক সচিব দাশ কর্মা শেরিং; ভুটান চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি; ভুটানের বিভিন্ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।