পিআইবিতে মহাপরিচালকের পদত্যাগ ও বিচার দাবিতে বিক্ষোভ
বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) স্থবির হয়ে পড়েছে। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে এখানে কোনো ধরনের কাজ হচ্ছে না। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদসহ তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক কর্মকর্তার অপসারণ ও বিচার দাবি করে প্রতিদিন বিক্ষোভ করছে।
আজ বুধবার সকালেও ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা–কর্মচারীরা ‘পিআইবির নির্যাতিত ও বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ’র ব্যানারে পিআইবি চত্বরে বিক্ষোভ করেন। জাফর ওয়াজেদ ২০১৯ সালে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর চার দফায় তাঁর চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।
ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সমাবেশে বলা হয়, এই প্রায় ১০ বছরে জাফর ওয়াজেদ অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎসহ কর্মকর্তা–কর্মচারীদের নানাভাবে হেনস্তা ও মানসিক নির্যাতন করেছেন। পরিচালক (প্রশাসন) চলতি দায়িত্বে থাকা জাকির হোসেন, পরিচালক (প্রশিক্ষণ) কে এম সাখাওয়াত, প্রটোকল কর্মকর্তা সামস এ হাসান, হিসাবরক্ষক আলী হোসেনকে নিয়ে একটি চক্র গড়ে তুলেছিলেন তিনি। পিআইবিকে তাঁরা ক্ষতবিক্ষত করে ফেলেছেন। ক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা এই কর্মকর্তাদের অপসারণ ও বিচার দাবি করেন।
বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের পক্ষে বক্তব্য দেন প্রশিক্ষক পারভিন সুলতানা, শাহ আলম, গবেষক শেখ মজলিশ, কামরুন্নাহার, সহকারী হিসাবরক্ষক মিজানুর রহমানসহ অনেকে। তাঁদের ভাষ্য, জাফর ওয়াজেদ এই চক্র নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ তছরুপ করা, উৎকোচ নিয়ে এখতিয়ার–বহির্ভূতভাবে চুক্তিভিত্তিক চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া, প্রতিবাদ করলেই নানাভাবে হয়রানি, এমনকি লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটিয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানটির প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও প্রকাশনার কাজ মুখ থুবড়ে পড়েছে। প্রশিক্ষণার্থী ও সাংবাদিকদের জন্য ইনস্টিটিউটের ডরমিটরি জাফর ওয়াজেদ তাঁর মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাদের নিয়ে আখড়া বানিয়ে তুলেছিলেন। এসব কারণে সরকার পতনের পর থেকে মহাপরিচালকসহ তাঁর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা কেউ পিআইবিতে আসছেন না।
পিআইবিতে দ্রুত কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এখন যে গভীর মানসিক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, তা দূর করতে অবিলম্বে এই চক্রের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা।