স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ: উৎকর্ষই যখন উদ্দেশ্য
গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড এডুকেশনের কনসেপ্ট নিয়ে প্রফেসর ড. এম এ হান্নান ফিরোজ ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা এবং শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন ও উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্য নিয়ে স্টামফোর্ড কলেজ গ্রুপের যাত্রা শুরু করেন। ২০০২ সালে জানুয়ারি মাসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ অনুমোদন নিয়ে যাত্রা শুরু করে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার মান ও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার ফলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন স্টামফোর্ডকে প্রথম সারির ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ বাংলাদেশে ‘আইএসও ৯০০১-২০০০’ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রথম ইউনিভার্সিটি। স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ বর্তমানে ‘উই ব্রিং আউট দ্য বেস্ট ইন ইউ’ স্লোগান নিয়ে এগিয়ে চলছে আগামীর পথে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজনীতি ও মাদকমুক্ত।
কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি এবং কিউএস এশিয়া-২০২৫ র্যাঙ্কিংয়ে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৪তম এবং সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ষষ্ঠ অবস্থানে থাকার গৌরব অর্জন করে। এ ছাড়া কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি এবং কিউএস এশিয়া-২০২৪ র্যাঙ্কিংয়ে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৫তম এবং সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৭ম অবস্থানে ছিল।
এ ছাড়া এলসেভির (Elseveir) সংগ্রহশালা স্কোপাস (Scopus) ২০১৪ সালে ১৫০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গবেষণার জন্য একটি জরিপ চালায়। এতে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ সম্মিলিতভাবে ২৪তম এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৪র্থ স্থান অর্জন করেছে। ২০১৭ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১০তম স্থান অর্জন করেছে।
শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ শিক্ষামান সুনিশ্চিত করার জন্য কর্মরত আছেন ২০১ জন পূর্ণকালীন শিক্ষক। এর মধ্যে ৩১ জন পিএইচডি ডিগ্রিপ্রাপ্ত। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতসহ কয়েকটি দেশের প্রায় ৪৪ জন শিক্ষক অতিথি শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিয়ে থাকেন। তাঁদের মধ্যে ২২ জন পিএইচডি ডিগ্রিপ্রাপ্ত।
শুরু থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত স্টামফোর্ড সর্বমোট ৩৪ হাজার ৯৯৫ জন ছাত্রছাত্রীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করেছে, তাদের মধ্যে ২০২৩ সালে প্রায় ১ হাজর ৪৩৯ জন ছাত্রছাত্রীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা শেষ করে দেশে-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুনামের সঙ্গে কর্মরত আছেন।
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি যুগোপযোগী আধুনিক শিক্ষার লক্ষ্যে নিত্যনতুন বিষয় চালু করছে। বর্তমানে পাঁচটি অনুষদে ১৪টি বিভাগের অধীনে মোট ২৯টি প্রোগ্রামে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। সেগুলো হলো ব্যাচেলর অব আর্কিটেকচার, বিএসসি ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, বিএসসি ইন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, বিএসসি ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, এমএসসি ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, মাস্টার ইন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন, ব্যাচেলর অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, এমএসসি ইন এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, বিএসসি ইন মাইক্রোবায়োলজি, এমএস ইন মাইক্রোবায়োলজি, ব্যাচেলর অব ফার্মেসি, মাস্টার অব ফার্মেসি, ব্যাচেলর অব ল’, মাস্টার অব ল, ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, মাস্টার অব সায়েন্স ইন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ব্যাচেলর অব আর্টস ইন ইংলিশ, মাস্টার্স অব আর্টস ইন ইংলিশ, মাস্টার অব আর্টস ইন ইংলিশ (প্রিলিমিনারি ও ফাইনাল), বিএসএস ইন ইকোনমিকস, এমএসএস ইন ইকোনমিকস, বিএসএসইন জার্নালিজম ফর ইলেকট্রনিক অ্যান্ড প্রিন্ট মিডিয়া, এমএসএস ইন জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ, এমএসএস ইন জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ, ব্যাচেলর অব আর্টস ইন ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া, মাস্টার অব আর্টস ইন ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া, ব্যাচেলর অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, মাস্টার্স অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং জাপান ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স।
তাত্ত্বিক পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষাটাও যেন সর্বোচ্চ মানসম্মতভাবে হয়, সে জন্য স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ইতিমধ্যে স্থাপন করা রয়েছে ৩৭টি সুসজ্জিত বিভাগভিত্তিক ল্যাব। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ল্যাব, ফার্মেসি ও মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাব, কম্পিউটার সায়েন্স ল্যাব এবং ১০টি আর্কিটেকচার ডিজাইন ও স্টুডিও ল্যাব। এ ছাড়া ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া ডিপার্টমেন্টের ৫টি ভিডিও এডিটিং প্যানেল এবং ৮টি প্রফেশনাল ক্যামেরা রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য ৫টি লাইব্রেরিতে রয়েছে ৪৮ হাজার বই এবং সাড়ে ৫ হাজার জার্নাল-ম্যাগাজিন। এ ছাড়া রয়েছে গবেষণা প্রতিবেদন, বিশ্বকোষ, অভিধান, হ্যান্ডবুক, ম্যানুয়েল ও এনজিও প্রকাশনা এবং ইলেকট্রনিক সম্পদের (ই-রিসোর্স) বিশাল সম্ভার।
উচ্চশিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে কাজ করছে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের রিসার্চ সেন্টার (এসইউআরসি)। এটি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ কর্তৃক অনুমোদিত ও পরিচালিত। এসইউআরসির অধীনে তথ্যপ্রযুক্তি, পরিবেশ এবং জৈব চিকিৎসাবিজ্ঞান, পরিচালনা ও সামজিক বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা চলছে। এসইউআরসি কয়েকটি সেন্টার নিয়ে গঠিত।
এই সেন্টারে অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত সদস্য রয়েছে। সেন্টারের মাধ্যমে গবেষকদের গবেষণাকর্ম পর্যবেক্ষণ, সংশোধন এবং জার্নালে প্রকাশের ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া গবেষণা কার্যক্রমের উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিনিময় চুক্তি রয়েছে। ইতিমধ্যে অ্যালপার ডজার (এডি) সায়েন্টিফিক ইনডেক্স র্যাঙ্কিং-২০২৪-এ বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগের মোট ৪৬ জন শিক্ষক স্থান পেয়েছেন।
উচ্চশিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে একজন শিক্ষার্থীকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলছে। এ লক্ষ্যে ১৮টি ক্লাব বা সংগঠন কাজ করে চলছে, যার মধ্যে ‘স্টামফোর্ড ডিবেট ফোরাম (এসডিএফ) নিয়মিত বিতর্ক চর্চা করে চলছে। স্টামফোর্ড অ্যান্টি ড্রাগ ফোরাম মাদকের বিরুদ্ধে, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ভলান্টিয়ার ক্লাব বিভিন্ন সমসাময়িক সচেতনতামূলক কাজসহ আর্তমানবতার সেবায় কাজ করছে।
স্টামফোর্ড জার্নালিস্ট ফোরাম (এসজেএফ) গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার প্রায়োগিক চর্চা নিয়ে এবং ‘আর্থ ফোরাম’ কাজ করছে পরিবেশ নিয়ে। বিনা মূল্যে রক্তদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ‘স্টামফোর্ড ইয়েস ক্লাব’। এ ছাড়া সাহিত্য ফোরাম, ‘স্টামফোর্ড ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ফোরাম’ (সেলফ), ‘স্ট্রে বার্ড’ (কালচারাল অ্যান্ড লিটেরারি ক্লাব) এবং ‘স্টামফোর্ড স্পট ক্লাব ক্রিকেট, ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলার আয়োজন করে।
‘স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফি সোসাইটি’, ‘ফিল্ম স্টুডেন্ট সিনে ফোরাম’ এবং ‘স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ড্রামা সোসাইটি’, অর্থনীতি বিভাগের ‘স্টামফোর্ড সোশ্যাল সায়েন্স স্টাডি ফোরাম’, ব্যবসায় প্রশাসনে ‘স্টামফোর্ড বিজনেস ফোরাম’, ফার্মেসি বিভাগের ফার্মা ফোরাম, স্টামফোর্ড লাইফ সায়েন্স ক্লাব ও রোবোটিকস ক্লাব নিয়মিত নিজস্ব অঙ্গনে কাজ করে চলেছে।