কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত, প্রাণহানি ও গ্রেপ্তারের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিক্ষুব্ধ কবি-লেখক সমাজ। তাঁরা বলেন, স্বাধীন দেশে এমন নির্মমতা মেনে নেওয়া যায় না। স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে বাস করেও কথা বলতে, লিখতে, দাবি জানাতেও ভয় হয়।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘স্বাধীন দেশে এমন নির্মমতা মেনে নেওয়া যায় না। নানাভাবে আমরা দেখেছি স্বজনহারা মানুষ নিস্তব্ধ। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন আবু সাঈদদের পিতা-মাতারা। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না।’
কবি টোকন ঠাকুর বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমরা স্তব্ধ। আমরা কোনো হত্যার বিচার চাই না, কার কাছে চাইব? শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের একাত্মতা পোষণ করি।’
যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে, তাদের বিভিন্ন নামে আখ্যায়িত করা হচ্ছে উল্লেখ করে গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়েজী প্রশ্ন তোলেন, ১৯৭১ সালের সঙ্গে আজকের কী পার্থক্য?
লেখক ইমরান মাহফুজ বলেন, একাত্তরের পর এমন ঘটনা মানুষ দেখেনি। যাঁরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন না, তাঁরা লেখক নন।
কথাসাহিত্যিক সাদাত হোসাইন বলেন, ‘এখন আমরা এমন এক স্বাধীন, গণতান্ত্রিক দেশে বাস করি, যেখানে কথা বলতে ভয় পাই, লিখতে ভয় পাই, আমাদের দাবি জানাতেও ভয় পাই।’
কর্মসূচির অন্যতম সমন্বয়ক লেখক ও সাংবাদিক আবিদ আজম শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির প্রতি সমর্থনের কথা জানিয়ে প্রকাশক মোরশেদ আলম হৃদয়, লেখক ইবরাহীম নীরবসহ আটক সবার মুক্তির দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, দেশের পরিস্থিতি দেখে তাঁরা হতবাক। কোনোভাবেই এটিকে স্বাধীন রাষ্ট্র মনে হচ্ছে না। ঘর থেকে বের হওয়ার উপায় নেই। পুলিশ যাকে-তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিবাদ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন, আশরাফ জুয়েল, বকুল আশরাফ, কাজল শাহনেওয়াজ, শিক্ষক ও গবেষক সরোজ মেহেদী, কথাসাহিত্যিক কিঙ্কর আহসানসহ অনেকে।