চোখে ছররা গুলির আঘাত নিয়ে অনেকেই হাসপাতালে
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে সরকারের নির্দেশে দেশের ভেতরে সব ধরনের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ ছিল। এ কারণে প্রথম আলো ডটকমে কোনো সংবাদ বা লেখা প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। যদিও এ কয়েক দিনে নানা ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সংঘাত–সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ১৮৭ জন। সংকট নিরসনে সরকারও একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এ সময়ে ছাপা পত্রিকা নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য উল্লেখযোগ্য সংবাদ ও লেখাগুলো অনলাইনে প্রকাশ করা হলো। এই প্রতিবেদনটি গত শনিবার (২০ জুলাই) প্রকাশিত হয়েছিল।
সোয়েব কবিরের দুই চোখে ছররা গুলির আঘাত। তাঁর চিকিৎসা চলছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসা শেষে দুই চোখে স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন কি না, তা তিনি নিশ্চিত নন।
সোয়েব কবিরের বাড়ি নরসিংদীতে। তিনি অর্থনীতির তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বৃহস্পতিবার কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুলিশ আন্দোলনকারীদের দিকে ছররা গুলি ছোড়ে। অনেকের সঙ্গে এই শিক্ষার্থীও আহত হন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে ছররা গুলির আঘাতে আহত হয়ে ২৭ জন ভর্তি ছিলেন। তাঁরা ঢাকা শহর ও ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে এসেছেন। তাঁদের কারও কারও চোখের অবস্থা বেশ ঝুঁকিতে।
গত চার–পাঁচ দিনে সংঘর্ষের সময় পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে অনেক মানুষ আহত হয়েছেন। অনেকের মুখসহ সারা শরীরে ছররা গুলির আঘাত দেখা গেছে। এসব মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন। অনেকে চিকিৎসাধীন। তবে ছররা গুলির আঘাতে ঠিক
কত মানুষ আহত হয়েছেন, তার সঠিক তথ্য জানা যায়নি।
গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অধ্যাপক প্রথম আলোকে বলেন, চোখে ছররা গুলি লাগা রোগীদের ঝুঁকি বেশি। দু–তিনজনের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। তাঁদের কারও একটি চোখ, কারও দুটি চোখ একেবারেই নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে।
নূর আলমের বয়স ৩৫ বছর। রাজধানীর শনির আখড়ায় এলাকায় ফুটপাতে ফল বিক্রি করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় পুলিশ ছররা গুলি ছোড়ে। সেই গুলিতে আহত হন নূর আলম।
নূর আলমের বাঁ চোখ, মুখসহ সারা শরীরে ছররা গুলি লেগেছে। তাঁর চোখে অস্ত্রোপচার করা হবে। চোখ পুরোপুরি ভালো হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন চিকিৎসকেরা।