সেমিনারে বিশিষ্ট চিকিৎসকেরা
হৃদ্রোগ-স্ট্রোকের মতো রোগে ‘মেডিটেশন’ বিদ্যমান চিকিৎসাব্যবস্থার পরিপূরক
উদ্বেগ, বিষণ্নতা, অনিদ্রা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোক-জাতীয় সমস্যা নিরসনে মেডিটেশন বিদ্যমান চিকিৎসাব্যবস্থার পরিপূরক হিসেবে কার্যকরভাবে প্রমাণিত। মেডিটেশনের মাধ্যমে ভালো চিন্তা জিনকেও বদলে দিতে পারে। এ ছাড়া মেডিটেশনচর্চায় স্বাস্থ্য ব্যয়েরও বিপুল সাশ্রয় হয়।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বিশিষ্ট চিকিৎসকেরা। ‘স্বাস্থ্যসেবার পরিপূরক হিসেবে মেডিটেশনের অন্তর্ভুক্তি: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এ সেমিনারে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের চার শতাধিক চিকিৎসক অংশ নেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক ডা. শাহলা খাতুন বলেন, চিকিৎসাক্ষেত্রে আমরা মানুষের দেহ ও মনকে ভুলে শুধু রোগ নিরাময়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু রোগ নিরাময়ের পাশাপাশি মনেরও চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসাশাস্ত্র প্রতিনিয়ত আধুনিক হচ্ছে। মেডিটেশনের মাধ্যমে ভালো চিন্তা জিনকেও বদলে দিতে পারে।
মেডিটেশনকে স্বাস্থ্যসেবায় অন্তর্ভুক্ত করায় সরকারকে সাধুবাদ জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ফ্যাকাল্টি অব বেসিক সায়েন্স অ্যান্ড প্যারা ক্লিনিক্যাল সায়েন্সের সাবেক ডিন এম ইকবাল আর্সলান। তিনি বলেন, মেডিটেশনচর্চায় স্বাস্থ্য ব্যয় সাশ্রয় হয়, যা জাতীয় স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি মেডিটেশনকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।
মনোরোগ-বিশেষজ্ঞ ও কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কোয়ান্টাম হার্ট ক্লাবের কো-অর্ডিনেটর মনিরুজ্জামান। আরও বক্তব্য দেন বিএসএমএমইউর প্যালিয়েটিভ মেডিসিন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নিজামউদ্দিন আহমদ।
আলোচকেরা বলেন, দৌড়ালে যেমন পায়ের পেশি শক্তিশালী হয়, সাঁতার কাটলে বাইসেপ শক্তিশালী হয়; তেমনি নিয়মিত মেডিটেশন করলে মস্তিষ্কের কর্মকাঠামো সুবিন্যস্ত, সুসংহত, গতিময় ও প্রাণবন্ত হয়। রোগ নিরাময়, প্রতিরোধ ও প্রশমনে মেডিটেশনের ভূমিকা এখন চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রমাণিত। সেমিনারে ‘চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনে মেডিটেশন’ নামে ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।