রাজ বাহাদুর ট্রেনের ধাক্কায় মরেছে, অন্য বন্দী হাতিগুলো কেমন আছে?

গত মে মাসে উত্তরার কোর্টবাড়ি লেভেল ক্রসিং এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায় বাচ্চা হাতি রাজ বাহাদুর, পরে হাতিটি রেললাইন থেকে সরিয়ে পাশের খোলা জায়গায় রাখা হয়
ছবি: প্রথম আলো ফাইল ছবি

রেললাইনের পাশে একটি খোলা জায়গায় খাবার খাওয়ার সময় ট্রেনের হুইসেল শুনে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল হস্তীশাবক রাজ বাহাদুর। ভয়ে রেললাইনের ওপর উঠে ট্রেনের সামনেই দৌড়াচ্ছিল। পরে আট বছর বয়সী হাতির বাচ্চাটি ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারায়। গত ১৭ মে দুপুরে রাজধানীর উত্তরার কোর্টবাড়ি লেভেল ক্রসিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে জানা যায়, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের এক বাসিন্দা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে হাতিটিকে পুষতেন। নারায়ণগঞ্জে একটি বিয়েবাড়ির জন্য হাতিটি ভাড়া দিয়েছিলেন তিনি।

রাজবাহাদুরের মৃত্যুর পর দেশে পোষা বা বন্দী হাতিগুলো নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। হাতি লালন–পালনের জন্য কতজন মালিক বা খামারির লাইসেন্স আছে? তাঁরা লাইসেন্সের নিয়ম মানছেন কি না? না মানলে শাস্তি হচ্ছে তো? বন বিভাগই বা দায়িত্ব কতটুকু পালন করছে? এমন কিছু প্রশ্ন ওঠে।

বাচ্চা হাতি রাজ বাহাদুর মারা যাওয়ার পর পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনসহ প্রাণী কল্যাণ নিয়ে সোচ্চার থাকা বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা বন অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন। সেখানেই দাবি জানানো হয়, দেশে বন্দী বা পোষা হাতির জন্য কতটি লাইসেন্স আছে, তা জানানোসহ সার্বিক তথ্য জানাতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে বন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখা জানিয়েছে, দেশে ২৫টি হাতি লালন–পালনের জন্য লাইসেন্স আছে। লাইসেন্স ছাড়া দেশে কত হাতি আছে, তার তথ্য অবশ্য তারা দিতে পারেনি।

পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা স্থপতি রাকিবুল হক সরকারিভাবে হাতিকে বশে আনার নিষ্ঠুর হাদানি পদ্ধতি বন্ধ করা, হাতির অভয়াশ্রম গড়ে তোলা এবং হাতির মালিকেরা হাতিগুলো আর পালতে না চাইলে সরকারিভাবে হাতিগুলোর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কথা বলেন।

আইনে যা বলা আছে
বাংলাদেশের সংবিধানে জীববৈচিত্র্য, বন ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধানের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সরকার বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২, প্রাণিকল্যাণ আইন, ২০১৯ নামে দুটি আইন করেছে। প্রাণিকল্যাণ আইনে প্রাণীর মালিক বা তত্ত্বাবধানকারী প্রাণীর প্রতি কল্যাণকর ও মানবিক আচরণ করবেন এবং নিষ্ঠুর আচরণ করবেন না বলে উল্লেখ আছে।

প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএনের লাল তালিকাভুক্ত এশীয় হাতিকে বাংলাদেশে মহা বিপদাপন্ন প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

হরিণ ও হাতি লালন-পালন বিধিমালা-২০১৭ অনুযায়ী, লাইসেন্স ছাড়া হরিণ ও হাতি পালন করা হলে সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। হাতি পালনের উপযুক্ত পরিবেশ মালিকের আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখার পরই লাইসেন্স দেওয়ার কথা। হাতি লালন–পালনের জন্য নিজস্ব মালিকানা, ভাড়া বা সরকারের কাছ থেকে দীর্ঘমেয়াদি ইজারা মূলে ভূমির দখল থাকতে হবে। চারণ সার্টিফিকেট ছাড়া সরকারি বনাঞ্চলে হাতি চারণ করা যাবে না।

হরিণ ও হাতি লালন-পালন বিধিমালা-২০১৭ অনুযায়ী, লাইসেন্স ছাড়া হরিণ ও হাতি পালন করা হলে সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। হাতি পালনের উপযুক্ত পরিবেশ মালিকের আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখার পরই লাইসেন্স দেওয়ার কথা। হাতি লালন–পালনের জন্য নিজস্ব মালিকানা, ভাড়া বা সরকারের কাছ থেকে দীর্ঘমেয়াদি ইজারামূলে ভূমির দখল থাকতে হবে। চারণ সার্টিফিকেট ছাড়া সরকারি বনাঞ্চলে হাতি চারণ করা যাবে না। হাতি ও হাতির বাচ্চার কানে ট্যাগ চিহ্ন থাকতে হবে। লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া হাতি বা তাদের কোনো ট্রফি কেনা, বেচা, দান, বিনিময় বা হস্তান্তর করা যাবে না। হাতির সংখ্যা বাড়া বা কমাসংক্রান্ত রেজিস্ট্রার ফরম সংরক্ষণ করতে হবে এবং অনুলিপি সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডেন অফিসে পাঠাতে হবে। হাতি মারা গেলে বা হাতির বাচ্চা হলেও জন্ম ও মৃত্যুসনদ নিতে হবে। লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ হাতির বাচ্চা প্রসবের ৯০ দিনের মধ্যে কানে ট্যাগ চিহ্নিত করা না হলে তা জব্দ বা বাজেয়াপ্ত করতে পারবে।

লাইসেন্স ছাড়া, লাইসেন্সের নবায়ন না করে হাতি লালন পালনের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটলে সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান আছে।

মানা হচ্ছে না আইন
রাজ বাহাদুরকে লালন পালন করতেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের নুরুল ইসলাম। তিনি ১০ লাখ টাকায় হাতিটি কিনেছিলেন। তখন এটির বয়স ছিল ১৫ মাস। নুরুল ইসলাম নিজেই হাতির নাম রাজ বাহাদুর রেখেছিলেন। নুরুল ইসলাম ২০২২ সালে লাইসেন্স নবায়ন করেছেন। তবে স্বীকার করলেন, তিনি লাইসেন্সের শর্ত মানেননি।

কমলগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় মালিকেরা বাচ্চা হাতি বিক্রি করেন। হাতির বাচ্চাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিয়েবাড়িসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান, সার্কাস, গাছ পরিবহন, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। নুরুল ইসলামের দেওয়া তথ্যমতে, কমলগঞ্জেই ২০০–এর বেশি হাতি আছে। কোনো মালিক লাইসেন্স নেন, আবার কোনো মালিক নেন না।

রাজবাহাদুর মারা যাওয়ার পর ১৮ মে ঢাকা রেলওয়ে থানায় বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সনাতন কুমার সাধারণ ডায়েরি করেন। ঢাকা রেলওয়ে থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. মোখলেছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মারা যাওয়া হাতির মালিক হাতি লালন-পালন বিধিমালার বিভিন্ন শর্ত লঙ্ঘন করেছেন। মৌলভীবাজার থেকে তিনি হাতিটি নারায়ণগঞ্জে মাহুতের কাছে হস্তান্তর করেছেন। নির্ধারিত রেজিস্ট্রারে তথ্য সংরক্ষণ করেন নেই। তাই হাতির মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন

হাতির দাঁত, হরিণের চামড়াসহ বন্য প্রাণীর দেহের মূল্যবান অংশ পাচারের অভিযোগে গত ২৬ মে চট্টগ্রাম নগরীর শুলকবহর এলাকার আবদুল মালেককে (৬৭) গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৭–এর একটি দল। আব্দুল মালেকের বাড়ি মৌলভীবাজারে। র‍্যাব তাঁর ভাড়া করা বাসার খাটের নিচে থেকে হাতির দাঁত, হরিণের চামড়া উদ্ধার করে। এগুলো নিজের কাছে রাখা কোনো লাইসেন্স দেখাতে পারেননি আবদুল মালেক।

২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে লাইসেন্সবিহীন ছয় বছর বয়সী একটি হাতিসহ আবদুর রউফকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রথম আলোর নালিতাবাড়ি প্রতিনিধির কাছে ময়মনসিংহ বন বিভাগের শেরপুর জেলার রেঞ্জার মনজুরুল আলম বলেছেন, মামলাটি খারিজ হয়ে গেছে। অভিযুক্ত আসামি জামিনে আছেন।

বন্ধ হচ্ছে না চাঁদাবাজি
রাজধানীসহ সারা দেশেই হাতি দিয়ে চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ লোকজন। যে হাতি দিয়ে চাঁদা তোলা হয়, সেগুলো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত থাকে। কম টাকা দিলে বা টাকা না দিলে পথচারী বা গাড়ির পথ আটকে দাঁড়িয়ে থাকে। মানুষ জান বাঁচাতে টাকা দিতে বাধ্য হন।

সম্প্রতি রাজধানীর কারওয়ানবাজারে হাতি নিয়ে টাকা তোলেন একজন
ছবি: প্রথম আলো

গত ২৯ এপ্রিল হাতি দিয়ে চাঁদা নিতে এলে বগুড়ার আদমদীঘির লোকমান প্রামাণিক ও তাঁর ছেলে জাহিদুল ইসলাম ভয় পেয়ে যান। মোটরসাইকেলে থাকা এই বাবা ও ছেলে পরে কাভার্ড ভ্যানের নিচে চাপা পড়ে মারা যান। এলাকার লোকজন হাতি ও মাহুতকে ধরে থানায় নিয়ে যান। তবে কাভার্ড ভ্যানের চালকের বিরুদ্ধে মামলা হলেও হাতির মালিক বা মাহুতের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি।

মাসখানেক আগে হাতি দিয়ে চাঁদা তোলার ভয়াবহ পরিস্থিতির বর্ণনা দিলেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি মোবাইলে প্রথম আলোকে বলেন, পৌরসভার সরু সড়কে হঠাৎ বিশাল এক হাতি দিয়ে চাঁদা তোলা হচ্ছিল। একে তো হাতিটি ছিল অনেক বড়, পাগলাটেও ছিল। সে এক ভীতিকর পরিবেশ ছিল।

মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মানুষ বন্দুক দেখিয়ে চাঁদাবাজি করে, আর কিছু মানুষ হাতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করে। হাতি দিয়ে চাঁদাবাজির সময় মানুষ বাধা দিতে থাকলে একসময় এ চাঁদাবাজি বন্ধ করা সম্ভব হবে।

বর্তমানে অমানবিক প্রক্রিয়ায় হাতি প্রশিক্ষণের বিষয়টি বন্ধের আলোচনা চলছে। হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করা যাবে না, তা আইন ও বিধিমালায় স্পষ্ট বলা আছে। এই হাতি আটক করার পর কোথায় রাখবে, তা–ও একটি প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে। শ্রীলঙ্কার মতো হাতির অরফানেজ বা এতিমখানা তৈরির কথা পরিকল্পনা করা হচ্ছে। হাতির সব তথ্য সহজে পেতে হাতির শরীরে চিপ লাগানোর বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে।
ইমরান আহমেদ, বন সংরক্ষক, বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, ঢাকা

গত ১৪ সেপ্টেম্বর পোষা বা বন্দী হাতির বিষয়ে মালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে ঢাকায় বন অধিদপ্তরে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন বিভাগের বন কর্মকর্তারা অনলাইনে উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়ভাবে হাতির চাঁদাবাজি নিয়ে বিব্রত হওয়ার কথা জানান অনেকেই।

ব্যবহৃত হচ্ছে ‘অমানবিক হাদানি’ পদ্ধতি
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে হাতির বাচ্চাকে বশে আনার জন্য প্রশিক্ষণের নামে অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরণ করায় বন বিভাগ ও থানা-পুলিশকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন আদালত। ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের একটি ভিডিও প্রতিবেদন ধরে মৌলভীবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও জাস্টিস অব দ্য পিস মুহম্মদ আলী আহসান এ নির্দেশ দেন। ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে পাহাড়ের গহিনে চার বছরের হস্তীশাবককে বশে আনতে লোহা দিয়ে তৈরি কুকু ব্যবহার, হস্তীশাবককে মা থেকে আলাদা করা, দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখাসহ বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরা হয়েছিল। কয়েক মাস ধরে চলে এমন নির্যাতন। স্থানীয়ভাবে এ প্রশিক্ষণকে বলা হয় ‘হাদানি’।

মৌলভীবাজার বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের নির্দেশনার পর এলাকায় প্রচলিত হাদানি পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ বন্ধ করা হয়েছে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত মালিকদের চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড় এলাকা থেকে চলতি বছরের মে মাসে একটি মৃত হাতি উদ্ধার করা হয়
ছবি: প্রথম আলো ফাইল ছবি

বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা আইসিইউএনের এশীয় হাতিসংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম এ আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে ব্যক্তিমালিকানায় হাতি লালন–পালনের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, তা নিয়ে ভাবতে হবে। অনেক জায়গায় পোষা হাতির আক্রমণে দুর্ঘটনা ঘটছে। তখন আর মালিক এর দায় নিচ্ছেন না।

শ্রীলঙ্কার মতো হাতিশালা করে উদ্ধার করা হাতি সেখানে রাখার পরামর্শ দেন এম এ আজিজ।

বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, ঢাকার বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বন্দী হাতি নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে অমানবিক প্রক্রিয়ায় হাতি প্রশিক্ষণের বিষয়টি বন্ধের আলোচনা চলছে। হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করা যাবে না, তা আইন ও বিধিমালায় স্পষ্ট বলা আছে। এই হাতি আটক করার পর কোথায় রাখবে, তা–ও একটি প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে। শ্রীলঙ্কার মতো হাতির অরফানেজ বা এতিমখানা তৈরির কথা পরিকল্পনা করা হচ্ছে। হাতির সব তথ্য সহজে পেতে হাতির শরীরে চিপ লাগানোর বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে।

১৯৪১ সালে সার্কাসের একেবারে অন্য রকম এক হস্তীশাবককে নিয়েই লেখা হয়েছিল ডিজনির গল্প ‘ডাম্বো’। এ গল্প অবলম্বনে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পায় ‘ডাম্বো’ চলচ্চিত্রটি। ডাম্বো সার্কাসের দলে জন্মায়। সার্কাসের মালিক ম্যাক্স মেডিসি ডাম্বোর যত্ন নেওয়ার জন্য হল্ট ফেরিয়ারকে নিয়োগ দেন। বিশাল কানের অধিকারী ডাম্বো সবার কাছে হাসির পাত্র হয়ে ওঠে। এমন সময় হল্টের দুই সন্তান আবিষ্কার করে যে ডাম্বো তার বিশাল কান ব্যবহার করে উড়তে পারে। সার্কাসের মালিক, সেই ডাম্বোকে ব্যবহার করে টাকা আয় করার নানা রকম অমানবিক রাস্তা খোঁজা শুরু করেন।

শুধু চলচ্চিত্রে নয়, বাংলাদেশে বাস্তবের রাজ বাহাদুরদের জীবনটাও ডাম্বোর মতোই। হাতির মালিকসহ সবাই সচেতন না হলে পরিস্থিতি পাল্টাবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম, নালিতাবাড়ী ও আদমদীঘি

আরও পড়ুন