যাত্রী হয়ে ট্রেনে উঠে ঘটনা ঘটানো হচ্ছে: রেলমন্ত্রী
নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে নিরাপদ রেলযাত্রাকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেছেন, গত ২৮ অক্টোবরের পর বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো যে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিচ্ছে, এই সময়ে রেলে সহিংসতা বাড়ছে। রেলকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যে ফেলে হুমকি তৈরি করা হচ্ছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
আজ মঙ্গলবার রেলভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রেলে সাম্প্রতিক নাশকতার বিষয়ে জানাতে আগেই এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছিল। এরই মধ্যে আজ ভোরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের তিনটি বগিতে আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পুড়ে যাওয়া একটি বগি থেকে মা ও তাঁর শিশুসন্তানসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও নাশকতা নিরাপদ রেল চলাচলের জন্য হুমকি। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যোগাযোগব্যবস্থায় যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল, সেখানে একমাত্র রেল চলাচল স্বাভাবিক ছিল। এখন রেল যোগাযোগব্যবস্থায় পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, যাত্রী হয়ে ট্রেনে উঠে এরপর নিরাপদ রেলে ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। বাসের বদলে ট্রেনকে এখন প্রধান হাতিয়ার করা হচ্ছে। পরিকল্পিত দুর্ঘটনা ঘটাতে ফিশপ্লেট খুলে নেওয়া হচ্ছে।
তেজগাঁওয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের বগিতে আগুন দেওয়া সম্পর্কে নূরুল ইসলাম বলেন, বিমানবন্দর স্টেশন ছেড়ে তেজগাঁও এলে ট্রেনটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তিনটি কোচ পুড়ে যায়। এখন পর্যন্ত চারজন মারা গেছেন।
রেলমন্ত্রী আরও বলেন, রেলের নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা হয়েছে। সন্ত্রাসীরা এসব কর্মকাণ্ড করে যেন রেল চলাচলে বিঘ্ন ঘটাতে না পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
রেলে নাশকতার বিষয়ে নূরুল ইসলাম বলেন, রেলপথে সরাসরি আক্রমণের প্রথম ঘটনা ঘটে গত ১৬ নভেম্বর। টাঙ্গাইলে কমিউটার ট্রেনের দুটি বগিতে ব্যাপক ক্ষতি করা হয়। এরপর ১৯ নভেম্বর জামালপুরের সরিষাবাড়িতে যমুনা এক্সপ্রেসে পরিকল্পিত নাশকতা করা হয়েছে। এ দুই ঘটনায় কোনো প্রাণহানি না হলেও বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন রেলমন্ত্রী।
নুরুল ইসলাম বলেন, ২২ নভেম্বর সিলেটে উপবন এক্সপ্রেসে আগুন দেওয়া হয়। ১৩ ডিসেম্বর গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে ২০ ফুট রেললাইন কেটে ফেলা হয়। এ ঘটনায় একজন যাত্রী মারা যায়। ৫০ জন আহত হন। ঘন কুয়াশার কারণে ট্রেন ধীরে চলছিল। তা না হলে ওই দুর্ঘটনায় আরও বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারত।
নাশকতার কারণে রেল চলাচল বন্ধ হবে না জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতেই পারে।
কিন্তু সহিংসতা করতে পারে না। সহিংসতা করে রেল চলাচল বন্ধ করা যাবে না। নাশকতার বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।