শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস দেশ গঠনের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় উদীচীর
শহীদ বুদ্ধিজীবীরা যে বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনের জন্য আত্মত্যাগ করেছিলেন, সেই দেশ গঠনের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে উদীচী এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানেই তাঁরা এ প্রত্যয় জানান। অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয়। এরপর দুটি সমবেত গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে শুরু হয় আলোচনা পর্ব। এ পর্বের শুরুতে আলোচনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে। তিনি বলেন, যে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবী এবং লাখো শহীদ রক্ত দিয়েছেন, এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে গণ–অভ্যুত্থানে শামিল হয়েছে আপামর জনতা। সমাজে শোষণ, বৈষম্য, অত্যাচার, নির্যাতন অব্যাহত থাকলে ’৭১ বা ’২৪—কোনোটিরই চেতনা বাস্তবায়িত হবে না।
এরপর বক্তব্য দেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ সেলিম, ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি নিবাস দে এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে আসিফ মুনীর।
আসিফ মুনীর বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী কেনাবেচার নিদর্শন পাকিস্তান আমলেও ছিল। কিন্তু তার ভেতর থেকেই আমাদের বুদ্ধিজীবীরা এ দেশ এবং এ দেশের মানুষের প্রগতির লড়াইয়ে অবিচল থেকেছেন।’
এ সময় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মাধ্যমে জাতিকে মেধাশূন্য করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, তা আজও চলছে। দেশের তরুণ প্রজন্মকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চলছে।
আলোচনা পর্বটি সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম।
আলোচনা সভার পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পর্ব। ছিল আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন। মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
এর আগে সকাল সাড়ে সাতটায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন উদীচী কেন্দ্রীয় এবং ঢাকার বিভিন্ন শাখা সংসদের নেতারা।