ফেনীর তিন উপজেলার বাড়িঘরে এখনো পানি
ফেনীর কয়েকটি উপজেলার বাসিন্দারা এখনো পানির সঙ্গে যুদ্ধ করছেন। দাগনভূঞা, সোনাগাজী ও সদরের কিছু উপজেলার গ্রামীণ রাস্তাঘাটের পাশাপাশি বাড়িঘরে পানি রয়েছে। এখনো কিছু মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এখনো প্রায় ২০ হাজার লোক আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছেন দাগনভূঞা উপজেলায়।
দাগনভূঞা উপজেলার কর মোল্লাপুর, উত্তর করিমপুর, রাজাপুরসহ বিভিন্ন এলাকা এখনো পানির নিচে রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিবেদিতা চাকমা বলেন, গতকাল শনিবার ১১ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন। পানি ধীরে ধীরে কমছে। আজ হয়তো আরও একটু কমবে। তবে এখনো বিভিন্ন এলাকায় পানি রয়েছে।
দাগনভূঞার উত্তর করিমপুর এলাকায় আজ রোববার সকালে গিয়ে দেখা যায়, চলাচলের সড়কটি হাঁটুপানিতে নিমজ্জিত। ওই পানি মাড়িয়ে তিন শ গজ গেলেই উত্তর করিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির নিচতলা থেকে এখন পানি নেমেছে। স্কুলের নিচতলা ও দোতলায় এখনো শ খানেক লোক অবস্থান করছেন।
জরিনা বেগম নামের ষাটোর্ধ্ব এক নারী জানান, তাঁর ঘর লালমিয়া টোকবাড়িতে। ছয় দিন ধরে তিনি এখানে রয়েছেন। ঘরে পানি এখন কিছুটা কমে হাঁটুর নিচে নেমেছে। আর এক দিন পর বাড়িতে ফিরবেন বলে জানান তিনি।
কর মোল্লাপুর এলাকার ঘরে ঘরে পানি রয়েছে। ওখানকার বাসিন্দা মো. শফিক বলেন, ‘২৫ আগস্ট থেকে ঘরে পানি ঢোকে। এরপর আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাই। এখন পানি কমেছে। তবে ঘরে কিছু পানি এখনো রয়েছে।’
ফেনী সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন এখনো পানিবন্দী। এর মধ্যে লেমুয়া, ধলিয়া অন্যতম। এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে তিন হাজারের মতো লোকজন রয়েছেন। বাসাবাড়িতেও পানি রয়েছে।
জানতে চাইলে ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসান বলেন, এখনো কিছু এলাকায় পানি রয়েছে। ঘরবাড়িতেও পানি আছে। পানি নামার পর ঘর পরিষ্কার করতেও সময় লাগে। তাই এখনো প্রায় তিন হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন।
সদরের তুলাবাড়িয়া এলাকায় দেখা যায়, লোকজন ঘর পরিষ্কারে ব্যস্ত। পানি কমার পর মেঝেতে কাদা জমে যায়। এখনো অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।
রনি পাল নামের একজন বাসিন্দা বলেন, তাঁদের পাড়ায় কমপক্ষে ১০টি ঘর একেবারে নষ্ট হয়েছে। বাকিগুলোতে কাদামাটি জমেছে। কিছু বাড়ির ঘেরা-বেড়া পানিতে তলিয়ে যায়।
ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ফাহমিদা হক বলেন, এখনো কিছু লোক আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রচুর ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।