প্রার্থিতা ফিরে পেলেন আরও ৪৬ জন

নির্বাচন কমিশন

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল নিষ্পত্তির চতুর্থ দিনে গতকাল বুধবার প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন আরও ৪৬ জন। আর যশোর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকসহ দুজনের প্রার্থিতা আপিলে বাতিল হয়েছে। তাঁদের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে ঋণখেলাপি হওয়ায়।

গতকাল মোট ১০৩টি আপিল নিষ্পত্তি করে ইসি। এর মধ্যে ৪৮টি আপিল মঞ্জুর করা হয়, যার দুটি ছিল মনোনয়নপত্রের বৈধতার বিরুদ্ধে আপিল। আর নামঞ্জুর করা হয় ৫৩টি, দুটি আপিল শুনানি হলেও রায় পরে ঘোষণা করা হবে। এখন পর্যন্ত ৩৯০টি আপিলে মোট ২১৪ জন প্রার্থিতা ফিরে পেলেন। আর প্রার্থিতা বাতিল হলো দুজনের।

গতকাল যাঁরা প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন এর মধ্যে মুক্তিজোটের ৬ জন, জাকের পার্টির ৪ জন, তৃণমূল বিএনপির ৩ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৩ জন, ইসলামী ঐক্যজোটের ২ জন, বিএনএফের ২ জন, বিএনএমের ২ জন, জাতীয় পার্টির ২ জন এবং কল্যাণ পার্টি, সাম্যবাদী দল, ইসলামিক ফ্রন্ট ও গণফ্রন্টের একজন করে। বাকিরা সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকের (বাবুল) মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে বৈধ ঘোষণা করেছিলেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। তাঁর মনোনয়নপত্রের বৈধতার বিরুদ্ধে ইসিতে আপিল করেন বিএনএমের প্রার্থী সুকৃতি কুমার মণ্ডল। তিনি এনামুলের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপি হওয়ার অভিযোগ আনেন। শুনানি শেষে ইসি আপিল মঞ্জুর করে। এতে এনামুল হকের প্রার্থিতা বাতিল হয়।

আপিল নিষ্পত্তির পর এনামুলের আইনজীবী হারুনুর রশিদ খান সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সুকৃতি কুমার মণ্ডল। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঋণখেলাপি হয়ে একজন কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না।

সুনামগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান শামছুল আবেদীনের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপি হওয়ার অভিযোগে আপিল করেছিল অগ্রণী ব্যাংক। সে আপিল মঞ্জুর হয়। তাতে ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।

নোয়াখালী-৪ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন বিকল্প ধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান। ঋণখেলাপি হওয়ায় তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রার্থিতা ফিরে পেতে তিনি ইসিতে আপিল করেছিলেন। সে আপিলও নামঞ্জুর হয়। ফলে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিলই থাকছে। লক্ষ্মীপুর-৪ আসনেও তাঁর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

দ্বৈত নাগরিকত্বের তথ্য যাচাই করছে ইসি

ফরিদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হকের মনোনয়নপত্রের বৈধতার বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল কাদের আজাদ (এ কে আজাদ)। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। গতকাল শুনানি হলেও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। ১৫ ডিসেম্বর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে ইসি।

ইসি সূত্র জানায়, এ কে আজাদের বিরুদ্ধেও দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ এনেছেন শামীম হক। এই দুই প্রার্থীর বিদেশি নাগরিকত্ব আছে কি না, সে বিষয়ে তথ্য জানাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে ইসি। ঢাকায় সংশ্লিষ্ট দুটি দেশের দূতাবাসের সহায়তায় এ সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে ইসিকে জানাতে বলা হয়েছে।

একইভাবে বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদ ও বরিশাল-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বিদেশি নাগরিকত্ব আছে কি না, সে সম্পর্কিত তথ্য জানাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে ইসি।