বিতর্ক-সমালোচনার মুখে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে নতুন নামে সাইবার নিরাপত্তা আইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখন নতুন মোড়কে পুরোনো আইন চলবে কি না, সে ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে নাগরিকদের মতামত গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে তারা।
গত সোমবার সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এখন খসড়াটি ভেটিং (আইনি যাচাই) সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবার মন্ত্রিসভায় উঠবে। সরকারের লক্ষ্য, আগামী সেপ্টেম্বরে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আইনটি পাস করা।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অধীন ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির ওয়েবসাইটে প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। এই খসড়ার সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দুই আইনের মধ্যে পরিবর্তন বলতে প্রথমত শাস্তি কমানো ও জামিনযোগ্য ধারা বাড়ানো হয়েছে। দ্বিতীয়ত, মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের অপরাধের (প্রমাণিত হলে) ক্ষেত্রে কারাদণ্ডের পরিবর্তে শুধু জরিমানার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সুজনের সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান ও সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শুধু নাম পরিবর্তন করে নতুন মোড়কে পুরোনো আইন আবার চালানো হবে কি না, তা নিয়ে সুজন উদ্বিগ্ন। নতুন আইনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রায় সব বিধানই থাকছে। কিছু পরিবর্তনের কথা জানা যাচ্ছে। এমনকি বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের বিধানও থাকছে। এতে নতুন আইনটি আগের আইনের মতো নাগরিকদের জন্য নিবর্তনমূলকই রয়ে যাবে বলে মনে করছে সুজন।
সুজনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অনেকটা হঠাৎ করেই এই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আগে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইনের ক্ষেত্রেও একই কাজ করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইনে সাজা কমানোর প্রসঙ্গে সুজন বলেছে, সাজা প্রদান করা হয় বিচারিক প্রক্রিয়ায় কেউ দোষী প্রমাণিত হলে। কিন্তু দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় হয়রানির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করে, নাগরিকদের মতামত গ্রহণ করে নতুন আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে সুজন।