ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে সহজডটকমের চারজনসহ গ্রেপ্তার ৯
ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকা থেকে ৯ জনকে আটক করেছে র্যাব। তাঁদের মধ্যে রেলওয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান সহজডটকমের চারজন কর্মী রয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের আটক করা হয়।
আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন সহজডটকমে কর্মরত সার্ভার অপারেটর নিউটন (৪০), একই প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মী মিজান ঢালী (৪০), সোহেল ঢালী (৩০) ও সবুর হাওলাদার (৪০)। আটক অন্যরা হলেন মো. সুমন (৩৯), জাহাঙ্গীর আলম (৪৯), শাহজালাল হোসেন (৪২), মো. রাসেল (২৪) ও জয়নাল আবেদীন (৪৬)।
র্যাব বলছে, আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ট্রেনের বিপুল টিকিট, আটটি মুঠোফোন, একটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), একটি চালকের সনদ (ড্রাইভিং লাইসেন্স), কালোবাজারির বিভিন্ন আলামত এবং টিকিট বিক্রির ১১ হাজার ৪২২ টাকা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, দেশব্যাপী ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূল হোতা মিজান ঢালী। এই চক্র সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন ধরে রেলওয়ের প্রায় সব ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করছিল। মিজান দীর্ঘদিন ধরে রেলওয়ের টিকিট বুকিংয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত আছেন।
মিজান ঢালীর বিষয়ে র্যাবের পরিচালক আরও বলেন, মিজান ২০০৩ সালে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান ডেফোডিলের কমলাপুর রেলস্টেশন শাখায় পিয়ন হিসেবে যোগ দেন। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ টিকিট বুকিংয়ের জন্য সিএনএসডটবিডির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে অভিজ্ঞ কর্মী হিসেবে মিজানকে চাকরিতে আবার বহাল রাখা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে রেলওয়ে টিকিটের দায়িত্ব সহজডটকমকে দেওয়া হলে সেখানেও মিজান ঢালীকে যুক্ত করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে টিকিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকায় সহজডটকমের কার্যালয়ে এবং বড় বড় রেলওয়ে স্টেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে তাঁর পরিচিতি বাড়ে। এই পরিচয়ের সূত্র ধরেই তিনি বিভিন্ন স্টেশনে থাকা সহজডটকমের সদস্য, টিকিট কাউন্টার ও অন্যান্য কালোবাজারির চক্রের সদস্যদের সমন্বয়ে বিভিন্ন কারসাজির মাধ্যমে বিপুল টিকিট বিক্রি করতেন।
র্যাব আরও বলছে, চক্রের সদস্যরা ঈদ, পূজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনে বিভিন্ন কৌশলে ও কারসাজির মাধ্যমে অধিকসংখ্যক টিকিট সংগ্রহ করতেন। টিকিট বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দুই ভাগে ভাগ করে অর্ধেক সহজডটকম ও রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট কাউন্টারম্যানরা নিতেন। বাকি ৫০ ভাগ চক্রের মূল হোতা মিজান, তাঁর প্রধান সহযোগী সোহেলসহ বিক্রয়কারী সহযোগীদের মধ্যে ভাগাভাগি হতো।