নাম ‘খান বাহাদুর’, দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ
বাদামি রঙের শরীরে রাজকীয় ভাব। ৯ ফুট ৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার গরুটির নাম রাখা হয়েছে ‘খান বাহাদুর’। ওজন প্রায় ২০ মণ বলে জানালেন খামারি। গরুটি কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন কক্সবাজারের টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদারবিল গ্রামের খামারি ও সাবেক ইউপি সদস্য আবু ছৈয়দ। ১৫ লাখ টাকা দাম হাঁকা হচ্ছে খান বাহাদুরের।
গতকাল সোমবার সকালে সরেজমিনে গোদারবিল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, খামারি আবু ছৈয়দের বাড়ির আঙিনায় একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে গরুটিকে। নুর আহমেদ নামের একজন রাখাল ঘাস খাওয়াচ্ছেন। গরুটি দেখতে এসেছেন বেশ কয়েকজন মানুষ। তবে লোকজন দেখলেই তেড়ে আসছে গরুটি। নুর আহমদ বারবার শরীরে হাত বুলিয়ে গরুটিকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন।
গরুর পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা নুর আহমদ বলেন, গরুটিকে সব সময় ফ্যানের নিচে রাখা হয়। লোডশেডিংয়ের কথা চিন্তা করে জেনারেটরেরও ব্যবস্থা রয়েছে। বাহাদুরকে প্রতিদিন ১০ কেজি গমের ভুসি, ভুট্টা, খেসারি ও মটর ডাল; ৫ কেজি চনাবুটের গুঁড়ার মিশ্রণ, ২০ কেজি ঘাস, ৫ কেজি খড় খাওয়ানো হয়। খাবারের পেছনে দৈনিক ব্যয় হয় আট শ টাকার মতো। সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার করে প্রতিদিন বাহাদুরকে গোসলও করান তিনি।
খামারি আবু ছৈয়দ বলেন, ব্রাহামা জাতের গরুটি বাছুর হিসেবে নোয়াখালী থেকে তিন বছর আগে সংগ্রহ করেন তিনি। এরপর গরুটিকে কাঁচা ঘাসের পাশাপাশি খৈল, ভুসি, ডালসহ দেশীয় দানাদার খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করেছেন। আকারে বড় এবং খানদানি আচরণের কারণে নাম রাখা হয়েছে খান বাহাদুর।
বিক্রির বিষয়ে আবু ছৈয়দ বলেন, ‘আমার ইচ্ছা বাড়ির উঠান থেকেই গরুটি বিক্রি করব, হাটে যাতে তুলতে না হয়। ১৫ লাখ টাকা দাম হেঁকেছি। তবে কিছুটা কম হলেও বিক্রি করে দেব।’
সরেজমিনে কথা হয়, গরুটি দেখতে আসা আশপাশের এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে। খোরশেদ আলম, মুজিবুর রহমান ও আলী আকবর নামে তিনজন জানান, তাঁদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, এবার টেকনাফের সবচেয়ে বড় গরু এটি। গরুটির বিষয়ে শুনে তাঁরা দেখতে এসেছেন। খামারি যাতে ন্যায্য দাম পান সেই প্রত্যাশা করেন তাঁরা।
টেকনাফ উপজেলার উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হারাধন চন্দ্র সুশীল বলেন, ব্রাহামা জাতের এই গরু সবার পক্ষে লালন-পালন করা সম্ভব হয় না। বর্ধনশীল জাতটির বাছুরের পরীক্ষামূলক উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তবু এরই মধ্যে যারা লালন-পালন করেছেন তাঁরা লাভবান হচ্ছেন।