চবিতে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় শিক্ষক সমিতির উদ্বেগ

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা।ছবি: জুয়েল শীল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শিক্ষক সমিতি৷ ছাত্রীকে নিপীড়নের পাঁচ দিন পর তাঁরা আজ শুক্রবার বিকেলে বিবৃতি দিয়েছেন।

 সমিতির সভাপতি সেলিনা আখতার ও সাধারণ সম্পাদক সজীব কুমার ঘোষ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ক্যাম্পাসে ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনায় শিক্ষক সমিতি উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত। দেশের অন্যতম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ঘটনা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের  মনে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানচর্চা ও জ্ঞান সৃষ্টির জায়গা। নিরাপদ ও ভয়হীন পরিবেশ জ্ঞানচর্চার পূর্বশর্ত। এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় শিক্ষক সমিতি শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতে অঙ্গীকার  পুনর্ব্যক্ত করছে।

শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে বলা হয়, যৌন নিপীড়নের এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিতে শিক্ষক সমিতি কাজ করে যাচ্ছে। সমিতি মনে করে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে আন্তরিক। অল্প সময়ের মধ্যে অপরাধীরা আইনের আওতায় আসবেন। যদি এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার গাফিলতি বা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে শিক্ষক সমিতি তা মেনে নেবে না।

গতকাল বৃহস্পতিবার বর্ষবরণের উৎসব করে সমালোচনার মুখে পড়ে শিক্ষক সমিতি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। যৌন নিপীড়নের বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় শিক্ষক সমিতির এমন কর্মকাণ্ডকে অবিবেচকের কাজ বলে মন্তব্য করেছেন আইন অনুষদের অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন।

ছাত্র ইউনিয়নের নিন্দা
নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা যখন আন্দোলনে, তখন শিক্ষক সমিতির বর্ষবরণ ও ফলাহারের আয়োজনের নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের নেতাকর্মীরা।

সংসদের সভাপতি প্রত্যয় নাফাক ও সাধারণ সম্পাদক আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় যৌথ বিবৃতিতে বলেন, যেখানে একজন শিক্ষকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হওয়ার কথা ছিল শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের জন্য তাঁদের পাশে দাঁড়ানো, সেখানে তা না করে উৎসবে ব্যস্ত হয়ে পড়া শিক্ষকদের আমলাতান্ত্রিক চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।

ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনার বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও এ আন্দোলনে যোগ দেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজনকে শনাক্ত করেছেন বলে দাবি করে পুলিশ।