গুলিতে নিহত বড় ছেলে, ক্যানসারে ছোট ছেলেকেও কি হারাবেন মা
ফাতেমা তুজ জোহরার দুই ছেলে ছিল। বড় ছেলে আবদুল্লাহ বিন জাহিদ ৫ আগস্ট রাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। বড় ছেলে মারা যাওয়ার ১৪ দিনের মাথায় এই মা জানতে পেরেছেন তাঁর ১৪ বছর বয়সী ছেলে মাহমুদুল্লাহ বিন জিসান ক্যানসারে আক্রান্ত।
কোলন ক্যানসারে (তৃতীয় পর্যায়) আক্রান্ত ছেলের চিকিৎসার খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ফাতেমা। এই ছেলেকেও হারিয়ে ফেলতে হয় কি না, এখন সে ভয় পাচ্ছেন তিনি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আবদুল্লাহ সক্রিয় ছিল। আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আবদুল্লাহ আনন্দমিছিলে যাওয়ার জন্য মায়ের কাছে অনুমতি চেয়েছিল। মা অনুমতি দিয়েছিলেন। তবে মাগরিবের আজানের পরপরই যাতে বাসায় ফিরে আসে, সে শর্ত দিয়েছিলেন মা। সন্ধ্যা ৭টা ৩৬ মিনিটে ফাতেমা ছেলেকে ফোন দিয়ে ১৭ সেকেন্ড কথা বলে সন্ধ্যা হয়েছে সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। ছেলে জানিয়েছিল আর আধা ঘণ্টার মধ্যেই বাসায় ফিরবে।
তবে রাত ৮টা ১০ মিনিটে অপরিচিত এক নম্বর থেকে ফোন করে একজন জানান, আবদুল্লাহ গুলিতে আহত হয়েছে। দ্রুত উত্তরার মা ও শিশু হাসপাতালে আসতে হবে। ফাতেমা হাসপাতালে পৌঁছাতে পৌঁছাতে আরও তিনবার ওই মুঠোফোন থেকে ফোন আসে। বলা হয়, দ্রুত না এলে আবদুল্লাহকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। প্রায় ৯টার দিকে ফাতেমা যখন হাসপাতালে পৌঁছান, তখন দেখেন, ছেলের নিথর দেহের দুই পায়ের বুড়ো আঙুল সাদা গজ দিয়ে বেঁধে রাখা।
ফাতেমা বললেন, সেই যে খরচের ধাক্কা শুরু হয়েছে, সেই ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চিকিৎসার খরচ যাতে একটু কম হয়, তার জন্য নিজে থেকেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন চিকিৎসক জামাল উদ্দিন। আবদুল্লাহর কলেজ কর্তৃপক্ষ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ছেলের কেমোথেরাপিসহ অন্যান্য খরচ কমানোর বিষয়টি দেখছে। এ ছাড়া আবদুল্লাহ মারা যাওয়ার পর কয়েকটি সংগঠন আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।
আবদুল্লাহ শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। মা জানান, উত্তরায় এপিবিএন সদর দপ্তরের উল্টো পাশে আবদুল্লাহ গলায় ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়। পিঠে যে গুলি লেগেছিল, তা আর শরীর থেকে বের করা যায়নি। ৫ আগস্ট রাতেই কিশোরগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে আবদুল্লাহকে দাফন করা হয়।
ফাতেমা ছোট ছেলেকে নিয়ে বর্তমানে রাজধানীর উত্তরার আবদুল্লাহপুরে থাকেন। গত মঙ্গলবার কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে বসে কথা বলেন এই মা।
ছেলে নেই, জন্মদিনও উদ্যাপন করা হবে না
আজ ১ নভেম্বর আবদুল্লাহর জন্মদিন। বেঁচে থাকলে ১৭ বছরে পা দিত সে। ফাতেমা বললেন, গত বছর বেশ বড় করে অনুষ্ঠান করে ছেলের জন্মদিন উদ্যাপন করেছিলেন। মারা যাওয়ার সপ্তাহখানেক আগে আবদুল্লাহ মায়ের কাছে এবারের জন্মদিনের আয়োজন সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল। মা আর্থিক অবস্থা ভালো না জানিয়ে ছেলেকে বলেছিলেন, এবার জন্মদিনে কোনো আয়োজন করতে পারবেন না। ছেলে তা মেনে নিয়েছিল।
ফাতেমা বললেন, ‘ছেলের জন্মদিন করব না বলেছিলাম, তা–ই সত্য হলো। এ জন্যই মনে হয় ও চলে গেল। এবার ছেলের জন্মদিনে ছোট ছেলেকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত থাকতে হবে। রান্না করারও সময় হবে না। তাই এক এতিমখানার বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য কিছু টাকা দেব।’
চাচাতো ভাই জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ফাতেমার। ২১ বছরের বিবাহিত জীবন। তবে কয়েক বছর ধরেই পারিবারিকভাবে নানা দ্বন্দ্ব চলছিল। এক বছর ধরে ফাতেমা ছেলেদের নিয়ে আলাদা থাকা শুরু করেন। ফাতেমা বলেন, বড় ছেলে গুলিতে মারা যাওয়ার পর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন ছেলের মৃত্যুর জন্য তাঁকেই দায়ী করেছেন। মা হয়ে তিনি কেন ছেলেকে আনন্দমিছিলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ছোট ছেলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পর এক দেবর ছাড়া স্বামী বা আর কেউ খবর নেননি, আর্থিক সহায়তাও করেননি বলে আক্ষেপ করেন ফাতেমা।
ফাতেমা যখন কথা বলছিলেন, তখন তাঁর ছোট ছেলে জিসান পাশে বসে ছিল। কেমোথেরাপির ধকলে হাতের বিভিন্ন জায়গায় কালো দাগ পড়ে গেছে। শুকিয়ে লিকলিকে হয়ে গেছে। সে নিজেও বুঝে গেছে এ কষ্ট তাকে সহ্য করতে হবে। তাই মাকে যতটুকু পারে, সহযোগিতা করছে হাসিমুখে।
ফাতেমার বাবা মারা গেছেন ১৯৮৮ সালে। আলাদা বাসা নেওয়ার পর থেকে মা, দুই ভাই ও এক বোন ফাতেমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। ছোট ছেলের চিকিৎসার খরচও তাঁরা দিচ্ছেন। কিন্তু নিজেদের সংসার সামলে তাঁরা কত দিন সাহায্য করতে পারবেন, তা–ও জানেন না ফাতেমা।
ফাতেমা বলেন, তাঁর বড় ভাই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আরেক ভাই টুকটাক ব্যবসা করেন। দুই ভাইকে নিজের সংসারের পাশাপাশি মাকে দেখতে হয়।
আবদুল্লাহ অনেক আদরের ছিল জানিয়ে ফাতেমা বলেন, ‘আমি নিজে অনেক কষ্ট করেছি, কিন্তু ছেলেকে কষ্ট পেতে দিইনি। এই ছেলে মারা যাওয়ার পর আমার ৮০ ভাগ জীবনই অন্ধকারে তলিয়ে গেছে। ছোট ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। ছোট ছেলের চিকিৎসার জন্য আমাকে মানুষের কাছে সাহায্য চাইতে হবে, এ ছাড়া তো আর উপায় নেই। এই ক্যানসারের ভালো চিকিৎসা হয় সিঙ্গাপুরে। ছেলের হত্যাকারীদের ন্যায়বিচার চাওয়ার পাশাপাশি বর্তমান সরকার আমার ছেলেটার চিকিৎসায় যাতে একটু সহায়তা করে, সেটাই আমার চাওয়া।’
আম্মু এলেই আমি ভালো হয়ে যাব
ফাতেমা আলাপ করতে করতে ৪ ও ৫ আগস্টের সেই ভয়াবহ দিনগুলোতে ফিরে যান। জানান, তখন তিনি ছেলেদের নিয়ে আশকোনায় এক বাসায় ভাড়া থাকতেন।
আশকোনাতেই বড় ভাই ও মা থাকেন। ৪ আগস্ট আবদুল্লাহ প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার কথা বলে আজমপুরে আন্দোলনে চলে যায়। ফোন করে বাসায় আসতে বললে ছেলে জানায় ঝামেলার জন্য আসতে পারছে না। বাধ্য হয়ে ফাতেমা তাঁর বড় ভাইকে ফোন করে ছেলের কথা জানালে বড় ভাই কৌশলে এক অফিসের ঠিকানায় কিছু জরুরি কাজের কথা বলে আবদুল্লাহকে যেতে বলেন। পরে রাতে বড় ভাই সেই অফিস থেকে আবদুল্লাহকে নিয়ে বাসায় ফেরেন। এর আগেও আন্দোলনে গিয়ে চোখের সামনে আবদুল্লাহ একজনকে গুলি লেগে মারা যেতে দেখেছে। নিজে কাঁদানে গ্যাস এবং পুলিশের লাঠিপেটা খেয়েছে।
ফাতেমা বললেন, ‘আমার দুই ছেলে কখনো বালিশে ঘুমাত না। আমার দুই পায়ে দুই ভাই মাথা রেখে ঘুমাত। বড় ভাই মারা যাওয়ার পর থেকে ছোট ছেলেটা আর আমার পায়ে মাথা রেখে ঘুমায় না। রাগ করলে বড় ছেলে একসঙ্গে আম্মু-মা ডেকে রাগ কমানোর চেষ্টা করত। বাইরে গেলে কোন শাড়ি বা জামা পরব, তা ঠিক করে দিত। গালের সঙ্গে গাল লাগিয়ে আদর করত। এসবই এখন আমি মিস করি।’
৪ আগস্ট রাতে আবদুল্লাহ বাড়ি ফেরার পর ফাতেমা ছেলেদের নিয়ে মুঠোফোনে লুডু খেলেন। টেলিভিশন দেখেন। ৫ আগস্ট আবদুল্লাহ নিজেই তাঁর নানার বাসায় গিয়ে টেলিভিশনে আন্দোলনের খবর দেখতে চায়। দুপুরে ফাতেমা নিজের হাতে ছেলেকে ভাত খাইয়ে দেন। নানার বাসায় যাওয়ার সময়ও আবদুল্লাহ মায়ের হাত ধরে নিয়ে যায়। দুই ভাই খুনসুটি করে।
ফাতেমা বললেন, ‘আবদুল্লাহ খুব চঞ্চল ছিল। নিজের হাতে ভাত খেতে চাইত না। নিজে গোসল করতে চাইত না। ২ আগস্টও আমি আমার এত লম্বা ছেলেটাকে গোসল করিয়ে দিই। আনন্দ মিছিলে যাওয়ার আগে সে তাঁর বড় মামার কাছে উত্তরার মিষ্টি খাওয়ার জন্য বায়না করে। একটি মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য আমার কাছে বায়না করেছিল। সেই মোবাইলটাই আর কিনে দিতে পারলাম না।’
ফাতেমা গুলি লাগার পর ছেলের অবস্থার কথা উল্লেখ করে বললেন, ‘হাসপাতাল থেকে যে ডাক্তার ফোন দিয়েছিলেন, তিনি জানিয়েছিলেন আবদুল্লাহ নিজেই তার নাম বলেছিল। বারবার নাকি বলেছিল, আমার আম্মুকে দ্রুত আসতে বলেন। আম্মু এলেই আমি ভালো হয়ে যাব। তবে এ কথাগুলো নাকি সে অনেক কষ্টে বলেছিল। আর তারপরই সে মারা যায়। আর যে ছেলে আবদুল্লাহকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল, আবদুল্লাহর অবস্থা দেখে ওই ছেলে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল।’
ফাতেমা অভিযোগ করে বলেন, আবদুল্লাহ মারা যাওয়ার পর তিনি যখন ছোট ছেলেকে নিয়ে দৌড়াচ্ছেন, তখন গুলিতে আবদুল্লাহ মারা যাওয়া নিয়ে আশকোনার এক ব্যক্তি ফাতেমার অনুমতি না নিয়ে মামলা করেছেন। মামলা করার আগে ওই লোক সাহায্য করার কথা বলে ফাতেমার কাছ থেকে আবদুল্লাহর মৃত্যুসনদসহ কিছু দরকারি নথি হোয়াটসঅ্যাপে নিয়ে নেন। মামলায় ওই ব্যক্তি তার যাঁদের সঙ্গে শত্রুতা আছে, তাঁদের আসামি করেন। ফাতেমার নাম করে অনেকের কাছ থেকে টাকা নেওয়া শুরু করেন। পরে বিমানবন্দর থানায় ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে ফাতেমা মামলা করেন। তিনি বলেন, ‘ছেলের লাশ বা মৃত্যু নিয়ে কেউ বাণিজ্য করবে, তা তো আমি হতে দিতে পারি না।’
ছোট ছেলেটা আমার হাত ধরে থাকুক
প্রথম আলো কার্যালয়ে বসে ফাতেমা যখন কথা বলছিলেন, তখন তাঁর ছোট ছেলে জিসান পাশে বসে ছিল। কেমোথেরাপির ধকলে হাতের বিভিন্ন জায়গায় কালো দাগ পড়ে গেছে। শুকিয়ে লিকলিকে হয়ে গেছে। সে নিজেও বুঝে গেছে, এ কষ্ট তাকে সহ্য করতে হবে। তাই মাকে যতটুকু পারে, সহযোগিতা করছে হাসিমুখে।
ফাতেমা জানালেন, আগে থেকেই ছোট ছেলে অসুস্থ ছিল। তবে অসুখটা ধরা পড়ছিল না। ১০ আগস্ট থেকে ছেলেকে নিয়ে দৌড়াচ্ছেন ফাতেমা। সিটি স্ক্যান, বায়োপসিসহ নানান পরীক্ষার পর ক্যানসার ধরা পড়ে। তারপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দিনের অধীনে ছেলের ক্যানসারের চিকিৎসা শুরু হয়।
ফাতেমা বললেন, সেই যে খরচের ধাক্কা শুরু হয়েছে, সেই ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চিকিৎসার খরচ যাতে একটু কম হয়, তার জন্য নিজে থেকেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন চিকিৎসক জামাল উদ্দিন। আবদুল্লাহর কলেজ কর্তৃপক্ষ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ছেলের কেমোথেরাপিসহ অন্যান্য খরচ কমানোর বিষয়টি দেখছে। এ ছাড়া আবদুল্লাহ মারা যাওয়ার পর কয়েকটি সংগঠন আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।
মাহমুদুল্লাহ বিন জিসানের মোট ১২টি কেমোথেরাপি লাগবে। চতুর্থ কেমোথেরাপি শেষ হয়েছে। ছয়টি কেমোথেরাপি দেওয়ার পর কেমোর পাশাপাশি রেডিওথেরাপি দিতে হবে। তারপর অস্ত্রোপচার করা হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেটির যে স্টেজে ক্যানসার ধরা পড়েছে, তাতে করে সে ভালো হয়ে যাবে, সে গ্যারান্টি দেওয়া যাচ্ছে না।’
প্রথম আলো কার্যালয় থেকে বের হওয়ার আগে ফাতেমা বললেন, ‘আমার দুই ছেলে কখনো বালিশে ঘুমাত না। আমার দুই পায়ে দুই ভাই মাথা রেখে ঘুমাত। বড় ভাই মারা যাওয়ার পর থেকে ছোট ছেলেটা আর আমার পায়ে মাথা রেখে ঘুমায় না। রাগ করলে বড় ছেলে একসঙ্গে আম্মু-মা ডেকে রাগ কমানোর চেষ্টা করত। বাইরে গেলে কোন শাড়ি বা জামা পরব, তা ঠিক করে দিত। গালের সঙ্গে গাল লাগিয়ে আদর করত। এসবই এখন আমি মিস করি।’
কথা শেষ করার পর ছোট ছেলের লিকলিকে হাতটি শক্ত করে ধরে ফাতেমা বললেন, ‘আমি এখন হাঁপিয়ে গেছি। আমার এ পথচলা তো এক দিনের না। জিসানকে যেন হারিয়ে না ফেলি, শুধু তা–ই চাই। আমি শুধু চাই, আমার ছোট ছেলেটা আমার হাত ধরে থাকুক।’