অপরাধী যে দলেরই হোক, রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।ফাইল ছবি

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, অপরাধী যে দলেরই হোক, তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না। যতই প্রতাপশালী হোক না কেন, তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নেওয়া হবে।

আজ বুধবার সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ঢাকা মহানগর এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনাসংক্রান্ত বিশেষ সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা মহানগর এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো হয়েছে, তবে আরও উন্নতি ঘটানোর সুযোগ রয়েছে। সে লক্ষ্যেই তাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন। মোহাম্মদপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেভাবে সফল হয়েছে, সেই মডেল রাজধানীর অন্যান্য এলাকায় প্রয়োগ করে ঢাকা শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ঘটানো হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ঢাকার ট্রাফিক–ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে অন্যতম সমস্যা হলো রাস্তার ওপর অবৈধ দোকানপাট বসা। এগুলো উচ্ছেদের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকার যানজট নিরসনে আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে প্রধান সড়কগুলোতে প্যাডেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলে আসা। তারা যেন চার্জিং পয়েন্টগুলোর মাধ্যমে ব্যাটারিচালিত রিকশায় চার্জ দিতে না পারে, সে বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপদেষ্টা এ সময় চাঁদাবাজি বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশনা দেন।

সভায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় বিধান, গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধিকরণ; চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ ও চাঁদাবাজি রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ; দখলবাজি রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে মহাখালী, গাবতলী, সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড, ট্রাকস্ট্যান্ডগুলোতে, যাত্রাবাড়ী, কারওয়ান বাজার, কাপ্তান বাজারসহ ভাসমান বাজারগুলোতে চাঁদাবাজি রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়।

যেকোনো জনসভা আয়োজনের ক্ষেত্রে ডিএমপির অনুমতি গ্রহণ নিশ্চিত করা, শাহবাগের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা আয়োজনের ব্যবস্থা করা, কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, ফুটপাত দখল রোধ, ফুটপাতে চাঁদাবাজি বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীসহ ঢাকা মহানগরের এলাকায় কর্মরত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।