বর্ষবরণে আতশবাজি, উচ্চ শব্দ নিয়ে ৩৬৫ অভিযোগ
খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উদ্যাপনের সময় গতকাল শনিবার রাতে শব্দদূষণ নিয়ে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ৩৬৫টি অভিযোগ এসেছে। গতকাল রাত ১২টার পর এসব অভিযোগের ফোন আসে। এর মধ্যে ১৬০টি ফোন এসেছে ঢাকা মহানগর এলাকা থেকে। নতুন বছর বরণ করতে গিয়ে (থার্টি ফার্স্ট নাইটে) দেশের বিভিন্ন স্থানে আতশবাজি ও পটকা ফুটিয়ে, উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে ও হইহুল্লোড় করে শব্দদূষণ করার অভিযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় ফানুস ওড়ানোর সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
৯৯৯-এর ফোকাল পারসন (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার আজ রোববার প্রথম আলোকে বলেন, আতশবাজি ও পটকার শব্দ রাত সাড়ে ১২টার পর তত শোনা যায়নি। তবে অনেক রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় উচ্চ শব্দে গান বাজানো হয়। হইহুল্লোড় করা হয়। গতকাল রাত ১২টার পর ৩৬৫টি জায়গা থেকে কল এসেছে। সব কটি জায়গায় সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ গিয়ে শব্দদূষণ বন্ধ করেছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রসঙ্গে আনোয়ার সাত্তার বলেন, ফানুস থেকে আগুনের ঘটনায় মোহাম্মদপুর ইকবাল রোড থেকে রাত ১২টা ৯ মিনিটে একটি কল এসেছিল। তবে ফায়ার সার্ভিস যাওয়ার আগেই আগুন নিভে গেছে। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে না যাওয়ায় অগ্নিকাণ্ড কোনো বাড়িতে নাকি অন্য কোথাও হয়েছে, তা জানা যায়নি।
এদিকে আতশবাজি, পটকা ফোটানো ও উচ্চ শব্দে গান-বাজনা নিয়ে গতকাল রাত ১২টার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেককে প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়। কেউ কেউ বলেন, অসুস্থ মানুষেরা এসব শব্দ শুনে আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরের (৯৯৯) তথ্যানুসারে, ২০২১ সালে আতশবাজি, পটকা, উচ্চ স্বরে গান-বাজনা, অনুষ্ঠান ইত্যাদি নিয়ে অভিযোগ এসেছে ৯ হাজার ২৩৮টি। ২০২০ সালে অভিযোগ জানিয়েছিলেন ৭ হাজার ৯৫২ জন। অর্থাৎ ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে উচ্চ শব্দের কারণে অভিযোগ বেড়েছিল ১৬ শতাংশ। ২০১৯ সালে অভিযোগ জানিয়েছিলেন ৫ হাজার ১৭ জন। ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বছরজুড়ে রাতে গান-বাজনাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান, নির্মাণকাজ, পটকা, আতশবাজি ইত্যাদির কারণে পরীক্ষার্থী, বয়স্ক ও অসুস্থ লোকদের সমস্যা হচ্ছে, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে জানিয়ে কল এসেছিল।
শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুসারে, আবাসিক এলাকায় দিনের বেলা (ভোর ৬টা থেকে রাত ৯টা) ৫৫ ও রাতে (রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা) ৪৫ ডেসিবেল (শব্দের তীব্রতা পরিমাপের একক), নীরব এলাকায় দিনে ৫০ ও রাতে ৪০, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০ ও রাতে ৫০, বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ ও রাতে ৬০ এবং শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ ও রাতে ৭০ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করা আছে।
এর চেয়ে বেশি শব্দ হলে তা শব্দদূষণ হবে। এ জন্য কোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হলে অনধিক এক মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।