শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় ছেঁটে ফেলা হচ্ছে টিলা
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ একটি টিলার সামনের অংশ ছেঁটে ফেলে মাদ্রাসা স্থাপনের কাজ চলছে। এলাকাবাসী বলছেন, এই স্থানে বিশেষ করে বৃষ্টি হলেই টিলায় ধস দেখা দেয়। এমন স্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জুড়ী উপজেলার সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের মনতৈল এলাকায় রয়েছে কে বি এহিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের জায়গাটা দান করেছিলেন খন্দকার এহিয়া নামের স্থানীয় একজন বিত্তশালী ব্যক্তি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির পাশে একটি উঁচু টিলা রয়েছে। এটি খন্দকারের টিলা নামেই এলাকায় পরিচিত। টিলাটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। মাটি কেটে নেওয়ার ফলে টিলাটির এ অবস্থা। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ২০১৬ সালে সরকারি অর্থে টিলার একাংশ ঘেঁষে পাকা দেয়াল নির্মাণ করে দেওয়া হয়। এখন ওই টিলা ঘেঁষে একটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ কারণে টিলার মাটি ছেঁটে ভিটা তৈরির কাজ চলছে।
গত ৩১ মার্চ সকালে গিয়ে দেখা যায়, খন্দকারের টিলাটি স্থানভেদে ১০ থেকে ১০০ ফুট উঁচু। কে বি এহিয়া বিদ্যালয়ের পাশে টিলার যে অংশটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, সেখানে পাকা দেয়াল তোলা আছে। তার কাছেই এক ব্যক্তি কোদাল দিয়ে টিলার সামনের অংশ ছেঁটে নিচে মাটি ফেলছিলেন।
কে বি এহিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা বেগম বলেন, এমনিতেই টিলাটি ঝুঁকিপূর্ণ। শিক্ষার্থীরা প্রায়ই এটির কাছাকাছি গিয়ে খেলাধুলা করে। বৃষ্টি এলে টিলা ধসে মাটি পড়ে। এ কারণে তখন শিক্ষার্থীদের টিলার কাছে যেতে বারণ করা হয়। এখন টিলা ঘেঁষে মাদ্রাসা হলে বড় ঝুঁকি দেখা দেবে।
ভূমিদাতা পরিবারের সদস্য খন্দকার আবুল বাশার মুঠোফোনে বলেন, মনতৈল বাজারের একটি বিপণিতে ‘আল মদিনা একাডেমি’ নামের একটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার কার্যক্রম চলছে। এলাকার কিছু লোক ওই মাদ্রাসা টিলার কাছে স্থানান্তর করতে চাইছেন। টিলা ছাঁটানোর বিষয়টি তাঁর জানা নেই। টিলা ঘেঁষে যাতে মাদ্রাসাটি স্থাপন করা না হয়, সে ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বলবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অসীম চন্দ্র বণিক বলেন, জুড়ীর বিভিন্ন স্থানে টিলা কাটার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কিছুদিনের মধ্যেই পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালাবে। তখন ওই বিদ্যালয়ের পাশের টিলা কাটার বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।