মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড়!
চৈত্রের খরায় বাগড়া দিয়ে কতই-না ঝড়বৃষ্টি হলো। বৈশাখে সেই কালো মেঘ যেন মুখ লুকিয়েছে। আকাশে মেঘ জমে বটে, বৃষ্টি ঝরে না। ধুলোট মেঘ, তুলোট মেঘ, কালো মেঘ—কোনো মেঘই নেই। আছে গনগনে সূর্য। সকালে একটু হিমেল ভাব থাকে বটে; বেলা যত বাড়ে, সূর্যের তেজ তত ছড়ায়।
আগামী কয়েক দিন সূর্যের তেজ আরও কিছুটা বাড়বে। পড়বে গরম। প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে সাগরের লোনা জল কিছুটা টগবগ করছে। এ থেকেই হয়তো বৃষ্টি বা ঘূর্ণিঝড় হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আসছে মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামছুদ্দীন আহমেদ প্রথম আলোকে গতকাল মঙ্গলবার বলেন, এ মাসের শেষ দিকে মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। নিম্নচাপটি শক্তিশালী হয়ে ২৮, ২৯ ও ৩০ এপ্রিলের পর ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এরপর সেটি আগামী ৩ মে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। তবে তার গতিপথ কী হতে পারে, সে-সম্পর্কিত তথ্য নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে পরে হয়তো জানা যাবে।
শামছুদ্দীন আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সবাইকে কিছুটা সতর্ক থাকতে হবে। প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের মে মাসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই সময় দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ বিভিন্ন অঞ্চলে কালবৈশাখী বয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে দাবদাহের কারণে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। এর মধ্যে উত্তপ্ত থাকবে বঙ্গোপসাগর। সাগর থেকে দু-একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এই নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ও সৃষ্টি হতে পারে।
এখনই দেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, খুলনা, যশোর, পটুয়াখালী, ভোলা অঞ্চলসহ চট্টগ্রাম বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাঙামাটি জেলায়—৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৩৫ দশমিক ২, ময়মনসিংহে ৩৪ দশমিক ৫, চট্টগ্রামে ৩৬, সিলেটে ৩৫ দশমিক ৯, রাজশাহীতে ৩৪ দশমিক ৬, রংপুরে ৩২ দশমিক ৪, খুলনায় ৩৬ দশমিক ৫ ও বরিশাল জেলায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আগামী দুই দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দিনের তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে।