গাইবান্ধায় বন্যার অবনতি, সান্তাহার-লালমনিরহাট ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ
উজানের ঢলে গাইবান্ধায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। আজ বুধবার সান্তাহার-লালমনিরহাট রেলপথে গাইবান্ধা সদর উপজেলার ত্রিমোহিনীতে রেলপথের ৫০০ ফুট অংশ ডুবে গেছে। এ কারণে আজ বেলা ১১টা থেকে এই পথে রেল যোগাযোগ বন্ধ আছে।
গাইবান্ধা রেলস্টেশনের মাস্টার আবুল কাশেম বলেন, আজ সকালে ত্রিমোহিনীতে রেলপথ ডুবে যাওয়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সান্তাহারগামী দোলনচাঁপা ট্রেনটি গাইবান্ধা রেলস্টেশনে এবং লালমনিরহাটগামী পদ্মরাগ এক্সপ্রেস ট্রেনটি বোনারপাড়া রেলস্টেশনে আটকে আছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।
এদিকে ঘাঘট নদের পানির চাপে গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ সড়কের জেলা শহরের অদূরে কদমেরতল এলাকায় একটি সেতু দেবে গেছে। এ কারণে গতকাল রাত ১২টা থেকে জেলা শহরের সঙ্গে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মধ্যে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। যমুনা নদীর পানির চাপে গাইবান্ধা-সাঘাটা সড়কের ভাঙ্গামোড় এলাকায় প্রায় এক হাজার ফুট অংশ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া সদর উপজেলার ত্রিমোহিনী ও পিয়ারাপুর এলাকায় এই সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে গাইবান্ধা জেলা শহরের সঙ্গে সাঘাটা উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
আজ সকালে গাইবান্ধা শহরের মুন্সিপাড়া, ভিএইড রোড, পি কে বিশ্বাস রোডে পানি উঠেছে। এসব এলাকার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। গত সোমবার ভেঙে যাওয়া গাইবান্ধা সদর উপজেলার গোদারহাট এলাকা দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে গাইবান্ধা-বালাসি সড়কের প্রায় তিন কিলোমিটার অংশ ডুবে গেছে। এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী জানান, বন্যার পানি ওঠায় জেলার চারটি উপজেলায় আরও ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান স্থগিত করা হয়েছে। এ নিয়ে চারটি উপজেলায় মোট ১২০টি বিদ্যালয়ে পাঠদান স্থগিত রয়েছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, আজ দুপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ১৪৬ সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি ৮ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট নদের পানি ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে করতোয়া নদীর পানি ১ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
গাইবান্ধার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক রোখসানা বেগম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বন্যাকবলিত চারটি উপজেলায় ৪০০ মেট্রিক টন চাল এবং দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বিতরণ শুরু হয়েছে। নতুন করে আরও এক হাজার মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ টাকা এবং পাঁচ হাজার শুকনো খাবার প্যাকেট বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।