কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

কুড়িগ্রামে নদ–নদীর পানি আরও বেড়েছে। গতকাল ব্রহ্মপুত্র নদের মধ্যবর্তী গুজিমারী চরে। ছবি: প্রথম আলো
কুড়িগ্রামে নদ–নদীর পানি আরও বেড়েছে। গতকাল ব্রহ্মপুত্র নদের মধ্যবর্তী গুজিমারী চরে। ছবি: প্রথম আলো

কুড়িগ্রামে নদ–নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। 

নদ–নদীর অববাহিকায় চর এবং আশপাশে গ্রামগুলো জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। অসংখ্য কাঁচা–পাকা সড়ক পানিতে তলিয়ে আছে।
বন্যাকবলিত লোকজন অনেকে পাকা স্কুল, সড়ক, বাঁধ ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, আজ সোমবার দুপুরে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র ৭৭ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদের পানি ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নদ–নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৫টি প্লাবিত হয়ে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। করোনার কারণে টানা তিন মাস ঘরে বন্দী লোকজনের ওপর চরম দুর্ভোগ নিয়ে এসেছে বন্যা। হাতে কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছে বিপুলসংখ্যক লোক। সেই সঙ্গে চরাঞ্চলে টিউবওয়েল (অগভীর নলকূপ) ও পয়োনিষ্কাশনের স্থান পানিতে তলিয়ে থাকায় সংকটে পড়েছে বানভাসি পরিবারের সদস্যরা, বিশেষ করে নারীরা।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, ১৬টি নদ–নদীর মধ্যে পানি উন্নয়ন বিভাগ মাত্র চারটির পানির গতিপ্রকৃতির হিসাব রাখলেও বাকিগুলোর কোনো খবর রাখে না। এদিকে মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠছে।

এ ছাড়া থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে জ্বালানি নষ্ট হওয়ায় রান্না করতে পারছে না ভুক্তভোগী মানুষ। হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরা। এ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা নারীদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। বৃষ্টি ও বন্যার ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদ্য মেরামত করা প্রতিরক্ষা বাঁধ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাইয়ের প্রথম দিকে ধরলা নদীর পানি হ্রাস পেলেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি স্থিতিশীল থাকবে বলে আবহাওয়া সূত্রে জানা গেছে। আমাদের লোকজন রাতদিন পরিশ্রম করছে। বাঁধ রক্ষায় বালির বস্তা ফেলে প্রতিরোধ করার চেষ্টা চলছে।’