জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা: শুধু দক্ষিণ এশিয়ার চাহিদাই প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন ডলার
পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে কার্বন নিঃসরণ ও নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের জন্য শুধু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর চাহিদা প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন বা ৫ লাখ কোটি ডলার। জাতিসংঘের অর্থ–সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
গতকাল বুধবার এ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, জলবায়ু রক্ষার স্বার্থে এশিয়ার ২০টি দেশের মোট ৩৭৪টি অবশ্য প্রয়োজনের জন্য খরচ ধার্য হয়েছে ৩ দশমিক ৩ থেকে ৪ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলার। এ অর্থের মধ্যে উষ্ণায়ন প্রশমন বা ‘মিটিগেশন’–এর জন্য প্রয়োজন ২ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলার এবং অভিযোজন বা ‘অ্যাডাপটেশন’–এর জন্য দরকার ৩২৫ থেকে ৪৩১ বিলিয়ন ডলার।
এ অর্থ দাবির মধ্যে সিংহভাগ ভারতের। বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ১২ বিলিয়ন ডলারও এর মধ্যে ধরা হয়েছে। এ চাহিদায় ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। এ রিপোর্ট এশিয়া–সংক্রান্ত হলেও এর মধ্যে চীনের চাহিদার কোনো উল্লেখ করা হয়নি।
প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী কার্বন প্রশমন ও অভিযোজনে রাষ্ট্রীয় নির্ধারিত অবদানের (এনডিসি) নিরিখে সবচেয়ে বেশি অর্থ প্রয়োজন এশিয়ার। তারপর আফ্রিকার। চাহিদার ভিত্তিতে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান ও পাকিস্তান। আয়তন, জনসংখ্যা ও দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের নিরিখে বাংলাদেশও রয়েছে প্রথম দিকে।
এ রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের ১৪২টি দেশের মোট ৫ হাজার ৭৬০টি প্রয়োজনের মধ্যে ২ হাজার ৭৫৩টির খরচ হিসাব করা হয়েছে। এটি মোট প্রয়োজনের ৪৮ শতাংশ। এর জন্য খরচের দাবি মোটামুটিভাবে ৫ থেকে সাড়ে ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। দূষণমুক্তির মাধ্যমে পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তুলতে হলে ২০৩০ সালের এই অর্থ উন্নত বিশ্বকে খরচ করতে হবে। সেই অর্থ উন্নত বিশ্ব দেবে কি না, দিলেও কতটুকু, বাকুতে ‘কপ২৯’–এর আসরে সেটাই মূল আলোচ্য বিষয়। সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের অনুপস্থিতি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদয় অর্থায়ন ঘিরে সংশয় তীব্র করে তুলেছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এ–সংক্রান্ত ঘোষণা বুঝিয়ে দেবে, বাকু সম্মেলনের সাফল্য–ব্যর্থতার মাত্রা কতখানি।