সাগরে নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে
বঙ্গোপসাগরের সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে তা বাংলাদেশের দিকে আসবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ–পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা সুস্পষ্ট লঘুচাপটি পশ্চিম ও উত্তর–পশ্চিম দিকে এগিয়ে গিয়ে আরও ঘণীভূত হয়েছে। সেখানেই এটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আজ সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ–পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর–পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা আজ প্রথম আলোকে বলেন, নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, এটি বাংলাদেশের দিকে না–ও আসতে পারে। আসলে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিম্নচাপকেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। নিম্নচাপকেন্দ্রের কাছের এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে থাকা সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
চলতি বছর এ পর্যন্ত তিনটি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে বাংলাদেশে। গত ১৪ মে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। এই ঘূর্ণিঝড় ওই দিন সন্ধ্যা ছয়টায় টেকনাফ হয়ে বাংলাদেশ উপকূল পেরিয়ে যায়। গত ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে। এতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে প্রাণহানি এবং বসতবাড়ি ও ফসলও নষ্ট হয়। এরপর গত ১৭ নভেম্বর আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, এই ঝড়ে দেশের ১৩ জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন আবার নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘মিগজাউম’। এটি মিয়ানমারের দেওয়া নাম।