মোখা মোকাবিলায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে প্রস্তুত ১৬০৬টি আশ্রয়কেন্দ্র
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে ১ হাজার ৬০৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে আজ শুক্রবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব আশ্রয়শিবিরে ১০ লাখ ৭ হাজার ১০০ জনকে আশ্রয় দেওয়া যাবে।
আজ বিকেলে দেশের চার বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত উঠিয়ে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান আজ বেলা সাড়ে তিনটায় প্রথম আলোকে বলেন, এর অর্থ হলো, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা এখন বাংলাদেশের দিকে আসছে। তাই সংকেত পাল্টানো হলো।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ১১ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তি দেয়। সেখানেই এই সংকেত পাল্টানোর বিষয়টি তুলে ধরা হয়। এর আগে আজ সকালে ঘূর্ণিঝড় মোখা প্রবল থেকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে পরিণত হয়েছে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় আগামী রোববার দুপুরের দিকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে এর অগ্রভাগের প্রবেশের কারণে আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল বা কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে। কক্সবাজার অঞ্চলে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সব স্তরে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, পৌর ও ইউনিয়ন ওয়ার্ড কমিটি সভা করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলায় ২০ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৫৯০ মেট্রিক টন চাল, সাড়ে ৩ মেট্রিক টন টোস্ট বিস্কুট, ৩ মেট্রিক টন ড্রাই কেক, ২০ হাজার খাওয়ার স্যালাইন ও ৪০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এই জেলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৮ হাজার ৬০০ ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ২ হাজার ২০০ স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ৫৭৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে ৫ লাখ ৫০ হাজার ৯৯ জনের ধারণক্ষমতা রয়েছে।
চট্টগ্রামে ১৪ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৬০৮ মেট্রিক টন চাল, সাড়ে ৩ মেট্রিক টন টোস্ট বিস্কুট, ৩ মেট্রিক টন ড্রাই কেক ও ৩০ হাজার প্যাকেট খাওয়ার স্যালাইন মজুত রাখা হয়েছে। আরও দেওয়া হয়েছে ৬০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটও। জেলাটিতে ৫৩০টি স্থায়ী ও ৫০০টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেগুলোর ধারণক্ষমতা ৫ লাখ ১ হাজার ১১০ জন। এরই মধ্যে সিপিপির ৮ হাজার ৮৮০ ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাঁরা আবহাওয়ার বার্তা প্রচার করছেন।