এ মাসে একাধিক তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে

কুড়িগ্রামে দুই দিন থেকে সূর্যের দেখা নেই। ঘন কুয়াশায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহনগুলো। কুড়িগ্রাম ধরলা সেতু এলাকা থেকে আজ তোলা।ছবি: প্রথম আলো

‘ঝিমঝিমে হিম-হাওয়া বয় বার বার, দিকে দিকে বাজে যেন শীতের সেতার।’ শীতকালের রূপ তুলে ধরা কবিতার লাইন দুটি সুনির্মল বসুর। আজ সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের প্রায় সব জায়গায় কুয়াশা পড়েছে। বইছে উত্তুরে হাওয়া। ঘরের বাইরে গেলে শরীরে কাঁপন সৃষ্টি হচ্ছে। রাজধানীতে সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও সূর্যের দেখা নেই। দেশের, বিশেষত উত্তরের জনপদগুলোয় দিনের বেলা আলো জ্বালিয়ে চলে সড়কের যানবাহনগুলো।

এ বছর ডিসেম্বর মাসেও শীতের প্রকোপ তেমন বেশি দেখা যায়নি। তবে মাসের একেবারে শেষে কুয়াশা যেমন বেড়েছে, তার সঙ্গে বেড়েছে শীত। সেই ধারাবাহিকতা চলছে এই জানুয়ারিতেও। আবহাওয়া অফিস বলছে, ডিসেম্বরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকলেও এ মাসে শীত জাঁকিয়ে বসতে পারে। হতে পারে একাধিক তীব্র শৈত্যপ্রবাহ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রতি মাসের শুরুতে ওই মাসের আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দেয়। তাতেই জানুয়ারির শৈত্যপ্রবাহের বার্তা দেওয়া হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে ডিসেম্বরের তাপমাত্রা ও বৃষ্টির খতিয়ান।

আবহাওয়ার এক মাসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, গত ডিসেম্বর মাসে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে শূন্য দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। ওই মাসে একাধিক লঘুচাপের কারণেই শীতের প্রকোপ কমে গিয়েছিল, এ মত দেন আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, অন্তত তিনটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয় ডিসেম্বরে।

এখন আবহাওয়া অধিদপ্তর জানুয়ারির পূর্বাভাসে বলেছে, এ মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হতে পারে। আবার এ মাসে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বঙ্গোপসাগরে।

দেশের পশ্চিম, উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দুয়েকটি মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। দেশের অন্যত্র দুই থেকে তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। আর এ তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ থেকে ৮ হলে তা মাঝারি, তাপমাত্রা ৪ দশমিক ১ থেকে ৬ ডিগ্রি হলে তা তীব্র আর তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে চলে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।

দিনের বেলায়ও আলো জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের ইকরচালী এলাকা থেকে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, জানুয়ারি মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে। তবে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকার কারণে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে।

তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ঠিক কোন সময়ে হতে পারে, তা জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, ‘তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’

এ মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পশ্চিম, দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও নদী অববাহিকা এলাকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। অন্য জায়গাগুলোতে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে।