প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে মোংলায়
বাগেরহাটের মোংলা বন্দর পৌরসভায় নির্মিত হতে চলেছে দেশের প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র। একটি ভারতীয় ও একটি দেশি কোম্পানির সঙ্গে আজ রোববার মোংলা বন্দর পৌর কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মেলনকক্ষে দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার। মোংলা বন্দর পৌরসভার মেয়র মো. জুলফিকার আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ভারতীয় হাইকমিশন খুলনার সহকারী কমিশনার রাজেশ কুমার রায়না, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার এবং উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক শেখ রিয়াজ আহমেদ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হোসেন খান, প্রিমিয়ার সোলার পাওয়ারটেক প্রাইভেট লিমিটেড ভারতের প্রধান নির্বাহী সুধীর মুলা ও সোলার ইপিসি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ইজাজ আল কুদরত এ মজিদ প্রমুখ।
উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার বলেন, ‘ভাসমান ও পুকুরপাড়ে সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্প পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অনন্য ভূমিকা পালন করবে। ভারতের সহযোগিতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে আমাদের মধ্যে মৈত্রী ভাব আরও সুদৃঢ় হবে। এ ধরনের প্রকল্প বাংলাদেশে এই প্রথম। এই দৃষ্টান্ত সামনে রেখে ভাসমান সোলার প্ল্যান্ট সারা বাংলাদেশে বৃদ্ধি পাবে আশা করি।’ সুন্দরবন সুরক্ষার কথা বিবেচনায় নিয়ে দেশের প্রথম ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র মোংলায় স্থাপনের জন্য তিনি পৌর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার রাজেশ কুমার রায়না বলেন, সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প। ঘনবসতি এবং এবং স্বল্প জায়গায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ আদর্শ দেশ। ভারতে এ ধরনের প্রকল্প বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এতে পরিবেশের ক্ষতি নেই। সুন্দরবন এবং পরিবেশ রক্ষায় এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন হবে অনন্য দৃষ্টান্ত। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার এবং উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক শেখ রিয়াজ আহমেদ বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। পরিবেশবান্ধব ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করায় মোংলা বন্দর পৌরসভার নাম বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে মোংলার কুমারখালীতে পানি শোধনাগার কেন্দ্রের দুটি পুকুর ও পুকুর পাড়ে ১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ভাসমান ও পুকুর ধার সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প স্থাপনে প্রিমিয়ার সোলার পাওয়ারটেক প্রাইভেট লিমিটেড ভারতের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন প্রধান নির্বাহী সুধীর মুলা, সোলার ইপিসি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড বাংলাদেশের পক্ষে চেয়ারম্যান ইজাজ আল কুদরত এ মজিদ এবং মোংলা পোর্ট পৌরসভার পক্ষে মেয়র মো. জুলফিকার আলী।
এরপর বেলা তিনটায় উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এবং ভারতের সহকারী হাইকমিশনার রাজেশ কুমার রায়না মোংলা বন্দর পৌরসভার কুমারখালী প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন।