সিইসি ও ইসি নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না, ধারাটি নিয়ে রুল

হাইকোর্টফাইল ছবি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না, এ-সংক্রান্ত বিধান প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওই নিয়োগসংক্রান্ত আইনের ৯ নম্বর ধারার বৈধতা নিয়ে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ রুল দেন।

২০২২ সালের ২৯ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনের ৯ ধারায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য কমিশনার (ইসি) নিয়োগে ‘হেফাজত’ বিষয়ে বলা রয়েছে। ৯ ধারার ভাষ্য, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতিপূর্বে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি ও তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলি এবং ওই অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলে গণ্য হবে এবং ওই বিষয়ে কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।’

১৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী আবেদনকারী হয়ে ৯ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করেন। আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেদওয়ান আহমেদ রানজিব।

পরে আইনজীবী শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, নিয়োগ নিয়ে দেশের কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না ধারাটিতে বলা হয়েছে। এ ধরনের দায়মুক্তি অসাংবিধানিক। ধারাটির মাধ্যমে আগে নিয়োগ করা নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিচার বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে, যা সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদ, ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতি ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পরিপন্থী—এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।

সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদ এবং বিচারিক পুনর্বিবেচনার ক্ষমতা পরিপন্থী হওয়ায় আইনের ৯ ধারার বিধানটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে কেন সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব ও নির্বাচন কমিশনসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রিট আবেদনকারী ১০ আইনজীবী হলেন আবদুল্লাহ সাদিক, জি এম মোজাহিদুর রহমান, মিসবাহ উদ্দিন, জোবায়দুর রহমান, নোয়াব আলী, আজিম উদ্দিন পাটোয়ারী, সাজ্জাদ সরওয়ার, মোজাহিদুল ইসলাম, মিজানুল হক ও এ কে এম নুরুন নবী।