ইউল্যাব ক্যাম্পাসে আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে: কর্তৃপক্ষ
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে (ইউল্যাব) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘৪ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পাসের ভেতরে বিনা নোটিশে জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু গ্রাফিতি আঁকার কারণে ২৯ ডিসেম্বর দুই শিক্ষার্থীকে শাস্তিমূলক সতর্কতা দেওয়া হলে ঘটনাটির সূত্রপাত হয়। তবে পরবর্তীতে শিক্ষকদের একাংশের আবেদন এবং শিক্ষার্থীদের বৃহত্তর স্বার্থে ইউ ল্যাব অবিলম্বে সেই সতর্কবার্তা প্রত্যাহার করে। একই সঙ্গে এও নিশ্চিত করা হয় যে, শিক্ষার্থীদের আঁকা এই গ্রাফিতিগুলো বহাল থাকবে।’
গত ৩১ ডিসেম্বর প্রায় পাঁচজন বহিরাগত ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আক্রমণ করে আপত্তিকর গ্রাফিতি আঁকে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। পরদিন ১ জানুয়ারি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের একটি ছোট দল বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট অবরোধ করে এবং গভীর রাত পর্যন্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধা দেয়। তারা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানায়।
ইউল্যাব কর্তৃপক্ষ বলেছে, জিম্মি অবস্থা তৈরি হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে খবর দেয়নি। বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবং জ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধৈর্য নিয়ে আলোচনা চালিয়ে গেছে।
শিক্ষার্থীদের পরিচালিত একটি স্বাধীন অনলাইন জরিপের কথা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রায় ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ইউল্যাবের উপাচার্য হিসেবে ইমরান রহমানকেই বহাল রাখতে চান। ১ জানুয়ারি ইউল্যাবের বাকি সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে সমাবেশ করে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছে এবং আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতি তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছে।
গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে ক্যাম্পাসে গ্রাফিতি আঁকায় গত রোববার দুই শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়ে ই-মেইল করে ইউল্যাব কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে পাঁচ দফা দাবিতে গত বুধবার থেকে আন্দোলনে নামেন ইউল্যাবের শিক্ষার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার বেলা একটার পর রাজধানীর বছিলায় ইউ ল্যাবের মূল ফটকের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী শিবলী সাদিক ও ইবতেশাম চৌধুরী আমরণ অনশন শুরু করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনশন শুরুর পর উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম মধ্যস্থতার জন্য তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদকে পাঠান। আবদুল হান্নান মাসউদ ইউল্যাব কর্তৃপক্ষ এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে একটি চুক্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেন। সেই চুক্তি অনুযায়ী, তিন কার্যদিবসের মধ্যে ইউজিসি বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি বিষয়ক তদন্তের স্বার্থে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে এবং কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত উপাচার্য ইমরান রহমান তাঁর দায়িত্ব পালন করা থেকে বিরত থাকবেন। সেদিনই শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন।
কর্তৃপক্ষ বলেছে, ইউল্যাব শিক্ষার্থীদের কল্যাণকে নিরন্তর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে। কারও শিক্ষাজীবনে অপ্রয়োজনীয় বিঘ্ন ঘটুক তা কখনই ইউল্যাবের কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা এবং মূল্যবোধ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সমর্থন দিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে কর্তৃপক্ষ। খবর বিজ্ঞপ্তির।