ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ: দেশে থেকেই আন্তর্জাতিক ক্যাম্পাসে পড়ার সুযোগ

ইউসিএসআই মালয়েশিয়ার একটি শীর্ষ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি: বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

দেশের বাইরের খ্যাতনামা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছা বা স্বপ্ন থাকে অনেকেরই। কিন্তু নানা কারণে কারও কারও পক্ষে সেই স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব হয় না। এবার সেই সুযোগ এসেছে। বাংলাদেশে বসেই বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা যাবে। সুযোগটি দিচ্ছে মালয়েশিয়ার ইউসিএসআই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ক্যাম্পাস। বাংলাদেশ সরকার-কর্তৃক অনুমোদিত প্রথম বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এটি। ঢাকার প্রাণকেন্দ্র বনানীতে অবস্থিত ১৫টি ফ্লোরের ক্যাম্পাস নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ব্যতিক্রমী শিক্ষাদান ও যুগোপযোগী আন্তর্জাতিক মানের কারিকুলামে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠছে ইউসিএসআই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ক্যাম্পাস।

র‍্যাঙ্কিংয়ে সেরা

ইউসিএসআই মালয়েশিয়ার একটি শীর্ষ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এ বছরই প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশে। কিউএস র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ১ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইউসিএসআই অন্যতম। এটি এশিয়ায় ৭২তম এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ১৬তম। বিশ্ববিদ্যালয়টির অভিজ্ঞ শিক্ষকেরা নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গবেষণা কার্যক্রমের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে নিয়মিত আয়োজন করা হচ্ছে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা-সম্পর্কিত সেমিনার ও কর্মশালা।

যেসব বিষয় পড়ানো হয়

মালয়েশিয়ার ইউসিএসআই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ক্যাম্পাসে রয়েছে বিশ্বব্যাপী চাহিদাসম্পন্ন ২৪টি ব্যাচেলরস ও মাস্টার্স প্রোগ্রাম। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে সিএসসি, বিবিএ, এমবিএ, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ফাইন্যান্সিয়াল ইকোনমিকস, ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, হসপিটালিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ম্যাস কমিউনিকেশন (মার্কেটিং/জার্নালিজম/ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন) ইত্যাদি।

ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাসের প্রভোস্ট চ্যান জো জিম  বলেন, ‘বিশ্বমানের শিক্ষা প্রদান করে থাকি বলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে আসে। প্রতিবছর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শতাধিক শিক্ষার্থী মালয়েশিয়াতে পড়াশোনা করার সুযোগ পায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার বিষয়ে আমরা সাহায্য করতে চাই। বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যে শিক্ষাক্রমে পাঠদান করা দরকার, আমরা সেভাবেই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করাই। পড়াশোনার মানের বিষয়ে আমরা সব সময় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি।’

আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা

বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদানের জন্য আধুনিক শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন বিশেষায়িত কম্পিউটার ল্যাব, ফ্যাশন ডিজাইন ল্যাব, গ্রাফিকস অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া ল্যাব, ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাবসহ রয়েছে সমৃদ্ধ লাইব্রেরি।

এ বিষয়ে ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাসের কনসালট্যান্ট লাই লি পেং বলেন, ‘আমরা খুবই আনন্দিত আমাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে। আমরা দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করিয়ে থাকি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

বাংলাদেশেই বিদেশি উন্নত শিক্ষা কার্যক্রম

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রয়েছে মালয়েশিয়ার মূল ক্যাম্পাসের অনলাইন লাইব্রেরি ও ল্যাব ব্যবহার করার সুযোগ। মালয়েশিয়ার মূল ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনলাইনে ক্লাস করা ও সরাসরি মূল ক্যাম্পাসে অধ্যয়নের সুযোগও পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের চিত্তবিনোদনের জন্য এ ক্যাম্পাসে রয়েছে বিভিন্ন ইনডোর গেমের ব্যবস্থা, যা তরুণ প্রজন্মকে সহশিক্ষা কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই কথা হয় ব্যাচেলরস প্রোগ্রামের শিক্ষার্থী মাইমুনা মাইশার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি ওয়ার্ল্ড র‌্যাঙ্কিংয়ে খুব ভালো অবস্থানে আছে। এর শিক্ষা কার্যক্রম খুবই মানসম্মত। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভার্চ্যুয়াল লাইব্রেরি আছে। আমাদের ল্যাবের সুবিধা খুবই উন্নত। ক্লাসগুলো খুবই ইন্টারঅ্যাকটিভ। শিক্ষকেরাও খুব বন্ধুসুলভ ও সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাবের। কোনো বিষয় না বুঝলে বারবার বুঝিয়ে দেন।’

কথা হয় আরেক শিক্ষার্থী আফ্রিদ সারওয়ার খানের সঙ্গে। তিনি ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাসের মাস্টার্স প্রোগ্রামের ছাত্র। আফ্রিদ সারওয়ার খান বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যে লেকচারগুলো আমরা পড়ছি, সেগুলো মালয়েশিয়া থেকে এখানে আনা হচ্ছে। আমাদের শিক্ষকেরা খুব আন্তরিক। অল্প সময়ের মধ্যে ভালো শিক্ষা নিতে পারছি। বাংলাদেশে থাকার কারণে খুব কম খরচে আমার পড়াশোনা করতে পারছি। কিন্তু সার্টিফিকেট পাচ্ছি মালয়েশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের।’

রয়েছে ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা

এ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা দেশেই আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি লাভ করার সুযোগ পাচ্ছেন। এ ছাড়া রয়েছে মালয়েশিয়ার মূল ক্যাম্পাসসহ বিশ্বের শীর্ষ ৩০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা এবং প্রোগ্রামগুলোতে ২০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত স্কলারশিপের সুযোগ। উচ্চশিক্ষা শেষে দেশি-বিদেশি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তিসহ যেকোনো তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন এই ঠিকানায়