মতিউর, তাঁর দুই স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের নামে থাকা জমি-ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ

মো. মতিউর রহমান

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মো. মতিউর রহমান ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা ৮৬৬ শতক জমি ও ঢাকার ৪টি ফ্ল্যাট জব্দের (ক্রোক) আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আজ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পিপি মীর আহমেদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, এনবিআরের সদস্য মো. মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হুন্ডির মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ দুদক অনুসন্ধান করছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুদকের পক্ষ থেকে মতিউর ও তাঁর প্রথম স্ত্রীর ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান, প্রথম স্ত্রীর মেয়ে ফারজানা রহমান ঈশিতা এবং দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তারের নামে থাকা ৮৬৬ শতক জমি জব্দের আবেদন করা হয়। পাশাপাশি বসুন্ধরা ও ধানমন্ডিতে প্রথম স্ত্রীর মেয়ে ফারজানা রহমান, দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তার ও প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে থাকা চারটি ফ্ল্যাট জব্দের আবেদন করা হয়। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন।

এর আগে গত ২৪ জুন মতিউর, তাঁর প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ ও প্রথম স্ত্রীর ছেলে আহমদ তৌফিকুর রহমানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ঢাকার আদালত।

এবার পবিত্র ঈদুল আজহার সময় এনবিআরের সদস্য মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে মুশফিকুর রহমান ১৫ লাখ টাকার ছাগল কিনতে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনায় আসেন। ছেলের বিলাসী জীবনযাপনের সূত্র ধরেই মতিউরের সম্পদের বিষয়টি আলোচনায় আসে।

মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসছে। এখন পর্যন্ত তাঁর দুই স্ত্রী, সন্তান, ভাইবোনসহ স্বজনদের নামে ছয় জেলায় জমি, ফ্ল্যাট, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, রিসোর্টসহ নানা সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেছে। এর বাইরে পুঁজিবাজারেও তাঁর বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে।

এ পর্যন্ত আলোচিত এই কর্মকর্তা ও তাঁর স্বজনদের নামে থাকা ৬৫ বিঘা (২ হাজার ১৪৫ শতাংশ) জমি, ৮টি ফ্ল্যাট, ২টি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং ২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি তাঁর প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে।

লায়লার নামে প্রায় ২৮ বিঘা জমি ও ৫টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার মিরপুরে একটি ভবনেই রয়েছে চারটি ফ্ল্যাট। কলেজশিক্ষক লায়লা কানিজ বর্তমানে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক।