সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১২ দফা নির্দেশনা দিলেন প্রধান বিচারপতি
সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আচরণবিধি যথাযথভাবে পালন করাসহ ১২ দফা সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সেবাগ্রহীতাকে হয়রানি করা হলে বা আর্থিক লেনদেন করলে, ওই কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নির্দেশনার শেষ দফায় উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের সম্মেলনকক্ষে সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত সহকারী রেজিস্ট্রার থেকে তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রধান বিচারপতি। সেখানেই তিনি এসব দিকনির্দেশনা দেন। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে প্রায় আধ ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠানে ৪০ কর্মকর্তা অংশ নেন।
প্রধান বিচারপতির দেওয়া নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আচরণবিধি (কোড অব কনডাক্ট) যথাযথভাবে পালন, দায়িত্ব পালনের সময় সব ধরনের আর্থিক লেনদেন বর্জন, সেবাগ্রহীতাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেবা নিশ্চিত করা, সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি না করা, সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে সহানুভূতিশীল আচরণ করা, প্রতিটি শাখায় প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন সম্পন্ন করা ও কোনো কাজ ফেলে না রাখা, প্রত্যেক শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার তাঁদের দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখার কার্যক্রম সম্পর্কে নিজ নিজ অতিরিক্ত রেজিস্ট্রারদের নিয়মিত অবহিত করবেন।
এ ছাড়া এসব নির্দেশনা ঠিকভাবে মেনে চলা হচ্ছে কি না, তা তদারকির কথা উল্লেখ করে নির্দেশনায় বলা হয়, প্রতি চার সপ্তাহ পরপর অতিরিক্ত রেজিস্ট্রাররা মনিটরিং কার্যক্রম ফলাফল সম্পর্কে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার ও রেজিস্ট্রারের (বিচার) কাছে প্রতিবেদন দেবেন।
যদি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী আচরণবিধি ও উল্লিখিত নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোনো সেবাগ্রহীতাকে হয়রানি করেন বা আর্থিক লেনদেন করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নির্দেশনার শেষ দফায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টে আসা বিচারপ্রার্থীদের উন্নত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তাঁদের দাপ্তরিক কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সংশ্লিষ্ট রুলস, বিভিন্ন সময়ে জারি করা প্র্যাকটিস ডাইরেকশন, সার্কুলার ও অন্যান্য নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণের নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি বিচারপ্রত্যাশী ও তাঁদের নিযুক্ত আইনজীবীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার ও উন্নত সেবা দেওয়ার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট সেবা প্রদানের উৎকর্ষতায় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ তৈরি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের তথ্য অনুসারে, বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ৩৮টি শাখা ও আপিল বিভাগে ১৯টি শাখা রয়েছে। একজন রেজিস্ট্রার জেনারেল, তিনজন রেজিস্ট্রার, চারজন অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার, একজন স্পেশাল অফিসার, ১২ জন ডেপুটি রেজিস্ট্রার, ২০ জন সহকারী রেজিস্ট্রারসহ বিভিন্ন কোর্ট ও শাখায় মোট ২ হাজার ৫০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত রয়েছেন।