কক্সবাজারে জনপ্রশাসন একাডেমি স্থাপনে ৭শ একর বনভূমির বন্দোবস্ত বাতিল

কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে এই বনভূমিতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ একাডেমি স্থাপনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কলাতলীর শুকনাছড়ি এলাকায়ছবি: সংগৃহীত

‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ স্থাপনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নামে দেওয়া ৭০০ একর বনভূমির বন্দোবস্ত বাতিল করেছে সরকার।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বনভূমির এই বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিতে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ স্থাপনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বন্দোবস্ত দেওয়া কক্সবাজার জেলার সদর উপজেলার ঝিলংজা মৌজার বিএস ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত বিএস ২৫০০১ নম্বর দাগের ‘পাহাড়’ শ্রেণির ৪০০ একর ও বিএস ২৫০১০ নম্বর দাগের ‘ছড়া’ শ্রেণির ৩০০ একর মোট ৭০০ একর জমি রক্ষিত বনের গেজেটভুক্ত হওয়ায় ওই বন্দোবস্ত বাতিল করা হয়েছে।

গত ২৯ আগস্ট এ বিষয়ে আধা সরকারি পত্র দেন পরিবেশ উপদেষ্টা। উপদেষ্টার পাঠানো আধা সরকারি পত্রে বলা হয়, বন্দোবস্ত করা এলাকা ১৯৩৫ সাল থেকে বন আইন ১৯২৭-এর ২৯ ধারার আওতায় রক্ষিত বন হিসেবে ঘোষিত। এই ২১৪৫.০২ একর ভূমির অংশে গর্জন, চাপালিশ, তেলসুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা এবং হাতি, বানর, বন্য শুকরসহ বিভিন্ন প্রাণীর আবাসস্থল রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ সালে এই বনভূমিতে বনায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

রেকর্ডে ‘রক্ষিত বন’ উল্লেখ না থাকায় বন বিভাগ এ বিষয়ে মামলা করে। পাশাপাশি, ভূমির বন্দোবস্ত বাতিল চেয়ে একটি রিট মামলাও হাইকোর্টে করা হয়। হাইকোর্ট বিভাগ এই বন্দোবস্তের বিষয়ে স্থগিতাদেশ দেন, যা আপিল বিভাগে বহাল রয়েছে।

আরও পড়ুন

১৯৯৯ সালে ঝিলংজা ইউনিয়নকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে বনভূমির গাছ কাটাসহ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন নিষিদ্ধ করা হয়। ৭০০ একর রক্ষিত বনও এই সংকটাপন্ন এলাকার অন্তর্ভুক্ত। সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদ এবং জাতিসংঘ জীববৈচিত্র্য সনদে বন সংরক্ষণের অঙ্গীকার রয়েছে। দেশের বনভূমির পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকায় এই বন্দোবস্ত জনস্বার্থবিরোধী।