ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি চট্টগ্রাম নগর। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় মানববন্ধন করে সংগঠনটির সদস্যরা বলেছেন, বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে যে হামলা হয়েছে, সেটি এই দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আক্রমণ। ভারতের ব্যর্থতার কারণেই এই হামলা হয়েছে।
নগরের ষোলশহরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য জোবাইরুল আরিফ, সাগুপতা বুশরা, চট্টগ্রাম নগরের সদস্য শিক্ষক জাহেদুল ইসলাম, শিক্ষার্থী মো. ইরফান উদ্দিন, ইমন সৈয়দ প্রমুখ।
এতে জোবাইরুল আরিফ বলেন, ‘সাম্প্রতিক ঘটনায় ভারত দুঃখ প্রকাশ করেছে। কিন্তু এই হামলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন ও নীতির লঙ্ঘন হয়েছে। ভারত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের সেনাসদস্যদের জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ভারতের মাটিতে শান্তি রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হোক।’
কর্মসূচিতে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের কোনো হামলা ভবিষ্যতে সহ্য করা হবে না। চট্টগ্রামে যে ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো বিচ্ছিন্ন কোনো বিষয় নয়। এগুলো সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ। আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার মাধ্যমে চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা কোনোভাবেই এটি হতে দিতে পারি না। সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নের কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না।’
বক্তারা আরও বলেন, দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজ করছে। কিন্তু ভারতের গণমাধ্যম সেই সম্প্রীতি নষ্ট করতে কাজ করছে। কিন্তু এই দেশে ৫ আগস্টের পর সম্প্রীতির নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে। যতই চেষ্টা হোক, সম্প্রীতি কেউ নষ্ট করতে পারবে না। সব ধর্মের মানুষ এখানে নাগরিক মর্যাদা নিয়ে বসবাস করবে। কেউ ফাটল ধরাতে পারবে না।
বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি
হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছে নগর বিএনপি। আজ বিকেলে নগরের কাজীর দেউড়ির নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বক্তব্য দেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন চৌধুরী, কাজী বেলাল প্রমুখ। এতে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্র নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। পতিত ফ্যাসিবাদীরা নানা ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে। সেই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।
এর আগে গতকাল সোমবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা চালানো হয়। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সংঘর্ষ সমিতিসহ কয়েকটি সংগঠনের সমর্থকেরা এ হামলা চালান। এদিন মুম্বাইয়ের বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের কাছাকাছি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) আয়োজনে কয়েক শ লোক বিক্ষোভ করেছেন।