স্বাস্থ্য খাতে অগ্রাধিকার বাস্তবায়নে ঘাটতি, বদলি–পদায়নে বিরোধ

হাসপাতালে জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা চলছেফাইল ছবি: প্রথম আলো

স্বাস্থ্য খাতে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার ছিল জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা। নানামুখী পদক্ষেপের পরও কাজটি এখনো ঠিকমতো হচ্ছে না। স্বাস্থ্যে নিয়মিত কাজের বাইরে বিভিন্ন পর্যায়ে বদলি–পদায়ন চলছে। যদিও এসব কাজ নিয়ে সমালোচনা রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক অনিয়মের মূলে ছিল দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ–পদোন্নতি। এর পাশাপাশি কেনাকাটায় ছিল সরকার–ঘনিষ্ঠদের ব্যবসায়িক দুর্নীতি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।

বর্তমান সরকারের ১০০ দিনে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পেশাজীবীদের সংগঠনের নামে এখন দলীয় প্রাধান্য ভিন্নভাবে দেখা দিয়েছে, যা গণ–অভ্যুত্থানের বৈষম্যবিরোধী আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নয়। তাঁরা এ–ও বলছেন, স্বাস্থ্য খাত প্রয়োজনীয় গুরুত্ব পায়নি।

নাগরিক সংগঠন সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশের আহ্বায়ক কাজী সাইফউদ্দীন বেন্‌নূর প্রথম আলোকে বলেন, অগ্রাধিকার বিবেচনায় জুলাই বিপ্লবে আহত ছাত্র-জনতার সঠিক ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা জরুরি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসকদের বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো সমন্বয় দেখা যাচ্ছে না। পাশাপাশি এই মন্ত্রণালয় এখনো দুর্নীতিমুক্ত হয়নি বলে তিনি মনে করেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পেশাজীবীদের সংগঠনের নামে এখন দলীয় প্রাধান্য ভিন্নভাবে দেখা দিয়েছে, যা গণ–অভ্যুত্থানের বৈষম্যবিরোধী আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নয়। তাঁরা এ–ও বলছেন, স্বাস্থ্য খাত প্রয়োজনীয় গুরুত্ব পায়নি।

আহতদের চিকিৎসা

দায়িত্ব নেওয়ার পর আগস্টের শেষ সপ্তাহে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেছিলেন, আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করাই তাঁর অগ্রাধিকার।

অন্তর্বর্তী সরকারের হিসাবে, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ৮৭২ জন শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১৯ হাজার ৯৩১ জন। তবে এই তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

যদিও আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিয়ে ধীরগতির সমালোচনা রয়েছে। এরই মধ্যে আহত ব্যক্তিরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না, এমন অভিযোগে একাধিকবার সচিবালয়ের সামনে ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের কাছে বিক্ষোভ করেছেন। সর্বশেষ ১৩ নভেম্বর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের একটি অংশ বিক্ষোভ করেন। এদিন বেলা ১১টার দিকে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম চিকিৎসা পরিস্থিতি জানার জন্য পঙ্গু হাসপাতালে যান। সঙ্গে ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার। বেলা একটার দিকে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা হাসপাতাল ছাড়ার সময় আহত ব্যক্তিদের একটি অংশ হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করেন।

যদিও আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিয়ে ধীরগতির সমালোচনা রয়েছে। এরই মধ্যে আহত ব্যক্তিরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না, এমন অভিযোগে একাধিকবার সচিবালয়ের সামনে ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের কাছে বিক্ষোভ করেছেন।

আহত ব্যক্তিদের দাবি ছিল তিনটি: বিদেশে উন্নত চিকিৎসা, আর্থিক সহায়তা ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করা। উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি। তাঁদের অবরোধ চলে রাত একটা পর্যন্ত।

পরদিন সচিবালয়ে আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় উপদেষ্টা ও একজন বিশেষ সহকারী। সেখানে আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসার পাশাপাশি পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, দেশের সব সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান থেকে সারা জীবন বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেওয়া, দেশে সম্ভব না হলে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করাসহ নানা সিদ্ধান্ত হয়।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এখন কোণঠাসা। তবে গত ১৫-১৬ বছর কোণঠাসা অবস্থায় থাকা বিএনপি ও জামায়াতপন্থী চিকিৎসকদের দ্বন্দ্ব এখন সামনে আসছে। বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল বা ইনস্টিটিউটের গুরুত্বপূর্ণ পদ নিয়ে বিরোধ চলছে।

সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার ১০০ দিনে স্বাস্থ্য খাতে তাৎপর্যপূর্ণ কাজ, অর্জন ও কর্মপরিকল্পনার একটি তালিকা পাওয়া গেছে। তালিকার শুরুতে আহত ব্যক্তিদের জন্য মন্ত্রণালয় কী করেছে, তার বর্ণনা আছে।

আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনে নীতিমালা তৈরি, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠন, বিনা মূল্যে হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, বিদেশি চিকিৎসক আনা, গুরুতর আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় বিদেশে পাঠানোসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তাদের আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে।

বদলি, বিরোধিতা, অস্থিরতা

আওয়ামী লীগ সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এখন কোণঠাসা। তবে গত ১৫-১৬ বছর কোণঠাসা অবস্থায় থাকা বিএনপি ও জামায়াতপন্থী চিকিৎসকদের দ্বন্দ্ব এখন সামনে আসছে। বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল বা ইনস্টিটিউটের গুরুত্বপূর্ণ পদ নিয়ে বিরোধ চলছে।

মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন হাসপাতালের কর্মকর্তারা বলেছেন, বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এবং জামায়াতপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) প্রশাসনের ওপর নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে চলেছে। মন্ত্রণালয়ের কিছু সিদ্ধান্তকে তারা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয় অধ্যাপক রোবেদ আমিনকে। এই নিয়োগের বিরোধিতা করে ড্যাব ও এনডিএফ। রোবেদ আমিন এক দিনের জন্যও মহাপরিচালকের চেয়ারে বসতে পারেননি। পরে নতুন মহাপরিচালক নিয়োগ দেয় মন্ত্রণালয়।

আমরা যৌক্তিক অংশ চাই। আমরা চাই যোগ্য ও সৎ মানুষকে পদায়ন করা হোক। পাশাপাশি বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, এমন চিকিৎসকদের বিশেষ বিবেচনায় রাখতে হবে।
এনডিএফের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহমুদ হোসেন

সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর অধ্যক্ষ, সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, সিভিল সার্জন, জেলা বা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকের পদে ছিলেন মূলত স্বাচিপের নেতা, সদস্য বা অনুসারীরা। এসব পদ থেকে তাঁদের সরানো হয়েছে। এসব পদ নিয়ে ড্যাব বা এনডিএফের নেতাদের দ্বন্দ্ব।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক হারুন অর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদ খালি পড়ে আছে। কিন্তু জনবল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ড্যাবের জনবল অনেক বেশি এনডিএফের তুলনায়। কিছু ক্ষেত্রে বাধা আসছে।

অন্যদিকে এনডিএফের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহমুদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যৌক্তিক অংশ চাই। আমরা চাই যোগ্য ও সৎ মানুষকে পদায়ন করা হোক। পাশাপাশি বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, এমন চিকিৎসকদের বিশেষ বিবেচনায় রাখতে হবে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন হাসপাতাল ও কলেজে অস্থিরতা চলছে। কিছু ক্ষেত্রে বদলি হচ্ছে ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকে। সব বদলি যে বৈষম্য দূর করার জন্য করা হচ্ছে, এটা বলা যাচ্ছে না।

আওয়ামী লীগের সময় যাঁরা বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন পদায়নে বা পদোন্নতিতে, তাঁদের অনেকেই অগ্রাধিকার পেয়েছেন। কিন্তু বদলি হওয়া চিকিৎসকদের কিছু ক্ষেত্রে বিরোধিতার মুখোমুখি হতে হয়েছে বা হচ্ছে। যেমন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে একজন সহকারী অধ্যাপককে রংপুর মেডিকেল কলেজে বদলি করা হয়। রংপুর মেডিকেলের কিছু চিকিৎসক প্রকাশ্য ঘোষণা দেন, ঢাকা থেকে বদলি হওয়া চিকিৎসককে কাজে যোগ দিতে দেবেন না। একই ঘটনা ঘটেছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন অধ্যাপকের ক্ষেত্রে। ওই অধ্যাপককে বদলি করা হয় যশোরে। যশোর থেকে একদল চিকিৎসক ঘোষণা দিয়ে এর বিরোধিতা করেন। ওই অধ্যাপক কাজে যোগ দিতে পারেননি। এ রকম উদাহরণ আরও আছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন হাসপাতাল ও কলেজে অস্থিরতা চলছে। কিছু ক্ষেত্রে বদলি হচ্ছে ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকে। সব বদলি যে বৈষম্য দূর করার জন্য করা হচ্ছে, এটা বলা যাচ্ছে না।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব দুবার বদলি হয়েছেন। সর্বশেষ বদলি হয়েছেন গত বুধবার। সেবা বিভাগে এসেছেন নতুন সচিব।

বলার মতো উল্লেখযোগ্য অর্জন দেখি না। বদলি–পদায়নের ক্ষেত্রে আমরা সার্চ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছিলাম। সার্চ কমিটির মাধ্যমে জনবল বাছাই ও নিয়োগ দিলে সমস্যা অনেক কম হতো।
সৈয়দ আব্দুল হামিদ, অধ্যাপক, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সংস্কার

জাতীয় অধ্যাপক আজাদ খানকে প্রধান করে অন্তর্বর্তী সরকার স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের জন্য একটি কমিশন করেছে। গতকাল পর্যন্ত এই কমিশন কোনো সভা করেনি। এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এম এ ফয়েজকে প্রধান করে চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করে সরকার। কিন্তু কাজ শুরুর আগেই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন এম এ ফয়েজ।

জুলাই–আগস্টের আন্দোলনের সময় আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১০০ দিনে যেসব কাজ সম্পন্ন করেছে, তা মূলত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের গতানুগতিক কাজ। যেমন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধ নিয়ে ১৪টি কাজের একটি তালিকা তারা দিয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সদের পদোন্নতির পাশাপাশি শূন্য পদ পূরণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তার তালিকাও আছে। এ ছাড়া সময়াবদ্ধ ১৪টি সংস্কার পরিকল্পনার কথা বলেছে মন্ত্রণালয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বলার মতো উল্লেখযোগ্য অর্জন দেখি না। বদলি–পদায়নের ক্ষেত্রে আমরা সার্চ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছিলাম। সার্চ কমিটির মাধ্যমে জনবল বাছাই ও নিয়োগ দিলে সমস্যা অনেক কম হতো। এমন বিশৃঙ্খলা দেখা যেত না।’

আহতদের চিকিৎসা সবচেয়ে জরুরি

খায়রুল ইসলাম, জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছিল অনেকটা নিষ্প্রভ। সচিব বদলসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে ও কমিটিতে ফ্যাসিবাদের দোসরদের সরিয়ে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে পারার বিষয়টি আংশিক সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে নেতিবাচক খবরই ছিল প্রধান। সংস্কারমূলক কোনো কিছু করতে না পারায় হতাশা এখন বেশি। তবে রাজনৈতিক দলের পেশাজীবীদের ধৈর্য ধরতে হবে। মন্ত্রণালয়ে যে ছাত্র প্রতিনিধিরা আছেন, তাঁদের মাঝেমধ্যে মাঠে যেতে হবে।

এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিছু কাজ হাতে নিতে পারে। যেমন:

১. আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে সমন্বয় ও সেবাদানকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।

২. বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে মতামতের ভিত্তিতে বদলি, পদোন্নতি ও পদায়নের কাজগুলো আগামী ছয় মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে।

৩. শিক্ষার্থী ও ধান্দাবাজির তকমাহীন ব্যক্তিদের নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য সহায়ক কমিটি করা যেতে পারে, যে কমিটি মাঝেমধ্যে সরেজমিন স্বাস্থ্যসেবা তদারক করবে এবং ছোটখাটো সমস্যা স্থানীয়ভাবে সমাধান করবে।

৪. স্বাস্থ্য কমিশন কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। আগের কমিটি আশু করণীয়র একটি তালিকা উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছিল। সেই তালিকা নিয়ে অত্যাবশ্যকীয় কাজ শুরু করা যেতে পারে। পরে কমিশনের রিপোর্ট চূড়ান্ত হলে অন্য কাজ করা যাবে।

৫. সব ধরনের সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধ সরবরাহ তিন থেকে পাঁচ গুণ বাড়াতে হবে। এ কাজ এ বছরের মধ্যে করতে হবে।