সম্রাট দেশে ফিরেছেন, দুদকের আবেদন খারিজ
আদালতের অনুমতি নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট ভারতে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন বলে হাইকোর্টকে জানানো হয়েছে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ বুধবার এ তথ্য জানান ইসমাইলের আইনজীবী।
ওই তথ্য জানানোর পর ইসমাইলকে বিদেশে যেতে অনুমতি দিয়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে দুদকের করা আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার আসামি ইসমাইল হোসেন চৌধুরীকে গত ১ জুন চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬। বিচারিক আদালতের ওই আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ১৬ জুলাই আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে।
সেদিন (১৬ জুলাই) ইসমাইল হোসেনের আইনজীবী আদালতকে জানান, চিকিৎসার জন্য ১৫ জুলাই ইসমাইল কলকাতা গিয়েছেন এবং ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে তাঁর দেশে ফেরার কথা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ১ আগস্ট পর্যন্ত বিষয়টি মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে। ইসমাইলের পক্ষে আদালতে দাখিল করা হলফনামায় বলা হয়, আদালত থেকে পাসপোর্ট ফেরত পাওয়ার পর গত ১৫ জুলাই স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিনি কলকাতায় যান। ২৪ জুলাই দেশে ফিরে এসে তিনি আদালতে পাসপোর্ট জমা দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ইসমাইলের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম রিপন।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ২০২২ সালের ২২ আগস্ট জামিনে কারামুক্ত হন ইসমাইল। এর আগে তিনি মাদক, অর্থ পাচার ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের তিনটি মামলা থেকে জামিন পান।
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর ইসমাইলের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাঁর বিরুদ্ধে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর ইসমাইলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে তাঁর বিরুদ্ধে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া অভিযোগপত্রে ২১৯ কোটি ৪৮ লাখ ৫৮ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, এ টাকা তিনি পাচার করেছেন। গত বছরের ২২ মার্চ অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ইসমাইল ও তাঁর সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তখন র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গ্রেপ্তারের সময় ইসমাইল ও আরমান মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তাঁদের কাছে বিদেশি মদ ছিল। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
গ্রেপ্তারের পর ইসমাইল ও আরমানকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আনা হয়। পরে ইসমাইলকে নিয়ে তাঁর কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। সেখানে বন্য প্রাণীর চামড়া, মাদক ও অস্ত্র পাওয়ার কথা বলা হয়। বন্য প্রাণীর চামড়া রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।